গুচ্ছ কবিতা ।। পাহাড়ী ভট্টাচার্য।। পুবাকাশ
হৃদয়-বৃত্তান্ত
তোমার কাছে কিছু অবারিত বিকেল চেয়েছি
গুটিকয় নির্জন দুপুর, কতিপয় গায়ত্রী সন্ধ্যা;
কিছু মৌন মধ্যরাতও প্রত্যাশিত ছিল আমার!
নিরঙ্কুশ নির্জনতায় নিজেকে ঢেকেছো ক্রমাগত
হৃদয়ের গহীন অতল অযাচিত ভেসে গেছে শুধু
অতৃপ্ত অমোঘ সন্মোহনে: প্রতীক্ষায়, প্রতীক্ষায়..!
কন্ঠস্বর
মুঠোফোনে ভেসে এলে তোমার প্রতীক্ষিত কন্ঠস্বর,
আমি আকন্ঠ নেশায় ডুবি, হই মৌতাত-মুগ্ধ মহেশ্বর!
তোমার শব্দেরা প্রিয় অর্কেষ্ট্রা, দুরাগত স্বপ্নের আশ্চর্য মেঘদল, হে উর্বশী তুমি আমার অর্ধেক আকাশ; কভু রৌদ্র-ছায়া, কভু জল, কখনো বজ্রপাত, কখনো ঝড়!
মুঠোফোনে
তোমার প্রত্যুত্তরের প্রতীক্ষায় থাকে মুঠোফোন;
তোমার খুদেবার্তার সশব্দ ঢেউয়ের অপেক্ষায়
আমার হৃদয়ে অবিরাম ছন্দপতন; জমে ভয়!
তোমার প্রতিক্রিয়া-মুগ্ধতার প্রত্যাশায় অবিরত
চোখে মাখি সুতীব্র অালোক-রশ্মি যত; অদ্ভুত
অযুত ক্ষরণ নিঃশব্দে, প্রিয়তর কিছু ক্ষয়!
তবুও
তবুও জড়িয়ে থাকে প্লায়স্টোসিন কিছু দু:খবোধ
হৃদয়ের গহীন গোপনে কিছু দীর্ঘশ্বাস, অচিন অসুখ
তবুও থাকে পিছুটান, অমোঘ হাতছানি যত নির্বোধ; অন্তর্দহন-দগ্ধ নিত্য, অনুক্ষণ। বিস্মৃতির এ তমসুক!
মিথস্ক্রিয়া
মূল্যবোধেরা কোনঠাসা, বাড়-বাড়ন্ত ঔদ্ধত্যের, প্রাবল্যের দাপটে গুটিশুটি তাবৎ স্বাভাবিকতা।
ক্রমবর্ধিষ্ণু আমিত্ব এখন, অহংবোধের মহোৎসবে! মনন মৃতবৎ, মানবিকতাও! সারল্য অর্বাচিন, জড়-সহজতা।
সুবচন নির্বাসনে; চক্ষু-কর্ণের বিবাদভন্জনে মুক! মুখ ও মুখোশের ধোঁয়াশা, মিথস্ক্রিয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ যত অনিবার্যতা!
পাহাড়ী ভট্টাচার্য : কবি ও প্রাবন্ধিক।