কিছু গল্প কখনো শেষ হয় না।।  রওশন রুবী।। পুবাকাশ 

অভি ভাঙাচোরা রাস্তা মাড়িয়ে মাড়িয়ে মানুষকে পাশ কেটে ফুটপাতে উঠলো। ফুটপাতে পাতিদোকানের চেয়ে খদ্দেরদের ভীড় চোখে পড়বার মতো। যেখানে সেখানে গজিয়ে উঠলেই হলো। অভি ফুটপাত দিয়ে একটু এগিয়ে যায়। চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে একটা বেনসন ও লাইটার নিল। সিগারেট জ্বালিয়ে জিনজার, লেবু মিশ্রিত এককাপ চায়ের অর্ডার করল। চা দোকানের পিচ্চিকে ইশারায় চা দিয়ে যেতে বলে একটু সরে দাঁড়ায়। আয়েশে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে নিনিতার কথা ভাবে। নিনিতাকে ভালোবাসে অভি। নিনিতাও তাকে ভালোবাসে। তবে মন থেকে অভি কখনো সাড়া পায়, কখনো পায় না বলে বিয়েটা হচ্ছে না। বন্ধুরা নিনিতার বিষয়টি জানে। তারা আড্ডায় বসলেই মজা করে এ নিয়ে। জানতেও চায় দেরি কেন? অভি নির্লিপ্ত হেসে থাকে। একদিন শুধু বলেছিল,

-ও একটা ঝগড়ুটে মেয়ে। ওকে বিয়ে করা মানেই অশান্তি বহন করে আনা। তারচেয়ে একাকী থাকাই ভালো।

বন্ধুরা বিশ্বাস করেনি বিষয়টি। ওদের হাসি দেখে টের পেয়েছে অভি। সে নিজেও জানে কথাটি কত মিথ্যে। নিনিতা অসম্ভব ভালো মেয়ে।

অভি একটু অবাক হলো তার পাশ ঘেঁষে এইমাত্র চলে গেছে হালকা কমলা রঙের জামা পরা যে মাঝবয়সী মেয়েটি; সে খুব চেনা। ডাকতে ডাকতেও থেমে গেলো। এ বয়সে হেংলার মতো রাস্তায় কাউকে ডেকে বসা মানায় না। তাছাড়া যদি ভুল হয়? ততক্ষণে মেয়েটি লোকালয়ে মিশে গেলো। আর দেখা গেলো না তাকে।

সত্যি কী তিথি ছিল ঐ মেয়েটি? হবে হয়তো। ভার্সিটিতে পরিচয় ওর সাথে। দেখতে তেমন ভালো ছিল না। তবে স্মার্ট , পড়া-শোনায় খুব ভালো ছিল। ওকে দেখলে কেউ বুঝবে না ওর মেধা সম্পর্কে। মেধা অবশ্য দেখার বিষয়ও নয়।

প্রায় বছর তিনেক আগে একবার দেখা হয়েছিল এমনি ভিড়ের ভেতর বরিশাল টু ঢাকার ইমাম হাসান লঞ্চ থেকে নামবার সময়। তখনও হারিয়ে গিয়েছিল সে।

একই ডিপার্টমেন্টে পড়ত অভিরা। কারণে অকারণে দেখা হতো। মাঝে মাঝে কথাও। হঠাৎ ভর্সিটিতে পহেলা বৈশাখের আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মোহ ফেলে ওকে আর আরাফাতকে দেখা গেল এক কোণে মগ্ন আলাপে। অভি চমকে গেল ভীষণ। আরাফাত হাবাগোবা স্বভাবের একটা ছেলে। সে আরাফাতই প্রেমের মতো কঠিন একটা কাজে জড়িয়ে পড়লো? অথচ অভি তখন পর্যন্ত কারো চোখের দিকে তাকাতেই পারেনি। সেই দেখার পর থেকেই ওরা কোথাও গেলে অভিসহই প্লান করে। অভি বেশ আগ্রহ নিয়ে ওদের সাথে যেতো। এভাবে যেতে আসতে কখন যেন ভীষণ মায়া জন্মে তিথির জন্য। কিন্তু কোন ভাবেই বন্ধু বা তিথিকে বুঝতে দেয় না। সতর্ক থাকে কথাবার্তা, তাকানো সবকিছুতেই।

মাস্টার্স ফাইনাল দিয়ে তারা যে যার মতো চলে যায় যে যার ঠিকানায়। শেষবার তিথি শুধু দু’মিনিটের মতো অভির চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। অভিও চোখ ফেরাতে পারে না। কেন যে তিথির চোখে হালকা জলের রেখা ঢেউ তোলে তাও বোঝে না সে। তারপর মুঠোফোনের নম্বরটি চায় এমন ভাবে,  অভি না করতে পারে না।

তারা তিনজন পরীক্ষার পর বিচ্ছিন্ন হলেও, সপ্তাহে তিনদিন নিয়ম করেই দেখা হতো আরাফাত ও অভির। কখনও টিএসসিতে, কখনও শাহাবাগে, কখনও প্রেসক্লাব মোড়ে, কখনও রমনাপার্কে আড্ডা দিতো। আড্ডা চলা কালে মাঝে মাঝে তিথির ফোন আসতো আরাফাতের ফোনে। ওরা কথা বললে অভি একটু দূরে সরে যেতো। সে মাঝে মাঝেই নিজের অজান্তে ফোনটা নেড়ে চেড়ে দেখতো। এমন আগ্রহে দেখতো যেন হারিয়ে যাওয়া প্রিয় কেউ তাকে ডেকে উঠবে যেকোন সময়। অবশ্য দু একবার আরাফাতের ফোনেই তিথি কথা বলেছে তার সাথে। তখন অভিমানে বারংবার মনে হয়েছে কথা বলবো না! বলবোই না! সেকি পারে না আমার ফোন কল দিতে? পাছে আরাফাত কিছু অণুমান করে, তাই বেশিক্ষণ সময় না নিয়ে কথা বলেছে। কেটে গেছে এভাবেও প্রায় ছয় বছর। অভি প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করে। আর আরাফাত এয়ার কাস্টমসে।

হঠাৎ একদিন আরাফাত এক্সিডেন্ট করলো। মারাত্বক আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা নড়লো মাস দুয়েক। তিথি ছুটে এলো আরাফাতের খবর পেয়ে দু’দুবার। প্রতিবারই ওকে টেককেয়ার করতে হলো অভি’কে।

সেই ছয় বছরে তিথির সৌন্দর্য চোখে পড়ার মতোই হয়েছে। সে তখন একটা এনজিওতে কাজ করে। তিথি আরাফাতকে নিয়ে বহু কথা ডিসকাস করে অভির সাথে। অভি আচ্ছন্ন হয় পুনরায় তিথির সান্নিধ্যে। তিথি কান্নায় ভেঙে পড়লে তার বুক চৌচির হয়। কিছু বলতে পারতো না। শুধু সান্ত্বনা দিত।

আরাফাত এক বিকেলে পাড়ি জমালো পরপারে। তিথিকে সেদিন অভি ফোন করে বলেছিল,

-তিথি আপনার গল্প শেষ।

তিথি স্তব্দ হয়ে গিয়েছিল। সম্ভিত ফিরে পেলে কিছুক্ষণ পরপর ফোন করে অবুঝের মতো চিৎকার চেঁচামেচি করে অভির সাথে। সেই থেকে অভির সাথে দীর্ঘদিন ফোন আলাপে অভ্যাস হয়ে উঠে তিথির। সে কিংবা চাপা স্বভাবের অভি; কেউ কারোর পছন্দের কথা বলতে পারে না। কিন্তু অভি জানে তিথি তাকে যথেষ্ট পছন্দ করে। তার পক্ষে নিজেকে মেলে ধরা কখনও সম্ভব ছিল না।

তিথি কোনদিন বুঝে কোনদিন বুঝে না অভিকে। কেমন প্যাঁচ লেগে যায়। তাই সে রিফিউস হবার ভয়ে কখনও নিজেকে হালকা করেনি।

কি অদ্ভুত জগত। ভালোবাসা না বলায় পুড়ে পুড়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়। কেউ কাউকে বলতে পারে না। এ কেমন মায়ায় পুড়ছে তারা? ক্ষত দেখাতে পারে না! এ কেমন কাঠিন্যে বন্দী দু’জন মানুষ?

দীর্ঘদিন পর একরাতে তিথি ফোন করে। এর মধ্যে অভি ভেবে রেখেছে তিথিকে বলবে তার মনের কথা। ফোন পেয়ে সে বলতে গিয়েও কেশে ফেলে। তিথি বলে,

-পানি খেয়ে আসুন, কথা আছে।

অভির মন চঞ্চল হয়; সে স্বপ্ন ভরা আকাশে বিচরণে বিভোর হয়। অভি তাড়াতাড়ি বলে,

-না!না!বলুন তিথি। আমি ঠিক আছি।

নিজের নামটা অভির মুখে শুনে তিরতির করে বুক। সেই কাঁপন গোপন করতে কিছু সময় চুপ হয়ে থাকে তিথি। অভি তাড়া দেয়,

-বলুন না? খুব কি কঠিন কথা?

-না কঠিন নয়। আবার কঠিনও। আসলে, আসলে…

তিথিকে সহজ করে দিতে অভি কথা ঘোরায়। বলে,

-কি আসলে? আপনি কাউকে ভালোবাসেন?

তিথি দু’মিনিট সময় নিয়ে বলে,

-বেসে ছিলাম। বাসিও। ভালোবাসা শাশ্বত।

তিথির কথায় অভির অস্থিরতা বাড়ে। এনিয়ে আর কথা বাড়াতে চায় না। কথা শেষ না করলে তিথির কাছে ধরা পড়ে যাবে নিজের দূর্বলতা। তাই অনিচ্ছায়ও বলে,

-তাকে বলেছেন?

-না; বলা হয়ে উঠেনি।

-কেন?

– কেন আবার! সাহস হয়নি।

-এ আবার সাহসের কি হলো?

-সাহসের হলো না বলছেন?

-আমার মনে হয় না।

-আরে, যদি শুনবার পর সে রাজি না হয়? তখন যদি তাকে আমি হারিয়ে ফেলি? আসলে হারাবার ভয়।

অভির বুকের ভেতর অদ্ভুত এক আনন্দ ঘনিভূত হয়। ততক্ষণে সে নিশ্চিত তীরটা তার দিকেই নিক্ষেপ করেছে তিথী। সে অনেক উৎফুল্লতা নিয়ে বলে,

-বলেদিন। সব চুকে গেলো।

-তাই হয় নাকি! তাকে যে আমি বুঝতেই পারি না। শুনবার পর যদি গল্প শেষ হয়ে যায়?

-কিছু গল্প কখনো শেষ হয় না। শেষ করে দিতে হয়।

-সে যাই হোক ওসব ভেবে আর কি হবে।

-এভাবে বলতে নেই তিথি। সাহসটুকু হারিয়ে ফেলি।

-আপনার সাহসের অভাব অভি। এই অভাব আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে দেবে না।

দু’জনে চুপসে যায় মিনিট তিনেক। শুধু দু’প্রান্তের ভারি শ্বাস স্পিকারে কম্পন তোলে। নিরবতা ভেঙে তিথি বলে,

-এখন শুনুন আমি কী বলতে চাই। গতকাল ঘরোয়া ভাবে আমার বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে আমেরিকায় থাকে। নিয়ে যাবে সেখানে আমাকে।

অভি মিনিট ক’য়েক কোন কথাই বলতে পারেনি। ওর দু’চোখ গলে যদি লাভা গড়িয়ে পড়তো তবে সে হাল্কা হতো। অভি সে সময় বুঝতে পারে বেশি চাপা স্বভাবও ভালো নয়।

আমেরিকার বদলে দু’দুবার তিথিকে স্বদেশের ভিড়ের ভেতর আবিস্কার করে কেমন যেন লাগে অভির। সেই রাতে তিথির নম্বর ডিলেট করে ফেলেছিল বলে ওর সাথে যোগাযোগের কোন সুযোগ ছিল না।

অভি চায়ের দাম মিটিয়ে বসুন্ধরার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। পূজোর দশদিন বাকি। উপছে পড়া ভিড় যেমন ফুটপাতে, তেমনি গাড়িতেও। নিনিতার জন্য একটা কিছু কিনতে হবে। তাদের পরিচয়ের পর এই তৃতীয় পূজো। অভি ঈদগুলোয় এবং পূজোর ছুটিতে ওর সাথে দেখা করে। এবারেও দেখা হবে ওর খালাতো বোনের বাসায়। সেভাবেই সব কথা হয়েছে এবং তার খালাতো বোনের সাথেও কথা বলেছে অভি। পূজোর পরের সপ্তাহে বিয়ে করবে তারা। বিয়েতে বন্ধুরা থাকবে আর কেউ নয়। যদিও নিনিতা আপত্তি করেছিল। অভি তাকে বুঝিয়েছে, বয়স করে বিয়ে, অমন আড়ম্বরে অস্বস্থি লাগবে। নিনিতা মেনে নিয়েছে বিষয়টি।

পূজোর দিন যতো ঘনিয়ে আসছে, মানুষ যেন ততই মরিয়া হয়ে উঠছে। এদের দেখে মাঝে মাঝে অভির মনে হয় এরা এমন ভাব করে যেন ঘরে তাদের কিচ্ছুই নেই। তাই পূজোর আগেই যা কেনার কিনে নিতে হবে। নয়তো ওদের অভাব আত্মীয়, স্বজন, অতিথিরা দেখে ফেলবে। এতে তাদের লজ্জার সীমা-পরিসীমা থাকবে না।

বসুন্ধরামলের আটতলায় দেশি দশ দোকানগুলো থেকে কিনে অভি। আজও কিনবে। ওগুলো থেকে কিনে স্বস্তি পাওয়া যায়। দাম চড়া হলেও কোয়ালিটি সম্পন্ন। আটতলায় উঠে অঞ্জনে ঢুকলো অভি। তেমন ভাল্লাগেনি কোন ড্রেস। তারপর রঙে এসে একটি ড্রেস পছন্দ হলো। ড্রেসের সাথে চুড়ি, কানের মিলাতে কসমেটিক্স কর্ণারে দাঁড়ালো। একটা সেট খুব পছন্দ হওয়াতে বের করতে বলে ভাবে নিনিতার কাছে জেনে নেওয়া যায় ওর কিছু লাগবে কিনা। হয়ত এমন কিছু লাগবে, যা সে অন্য কারোর কাছেই চাইতে পারে না। কথাটি ভাবতে ভাবতেই নিনিতাকে ফোন দেয়,

-হ্যালো নিনিতা! বসুন্ধরায় কাজে এসেছিলাম, তোমার কিছু লাগলে বল।

-পাগল নাকি! না লাগবে না।

-বিয়ের জন্য বা অন্যকিছু! এ্যাই বলো না প্লিজ!

-ফাজলামো হচ্ছে দুষ্টু। মাথা ফাটাবো। রাখো বলছি!

নিনিতা কখনোই কিছু চায় না অভির কাছে। অভি যখন যাই দিবে সেটুকুই অসীম আনন্দে গ্রহণ করে। তবু মার্কেটে এলেই অভি জানতে চায়। এটুকু আসলে নিনিতার লাজুকতাকে সম্মান দেখানো। সে ভাবে এভাবে অল্প অল্প করে সম্মান এবং যত্ন দিয়ে দিয়ে আপন করে নিতে হয় সম্পর্ককে। আর এভাবেই সুখি রাখা যায় সঙীকে। আজও কৌশলে ড্রেস কেনার কথা এড়িয়ে যায়। বিশেষ দিনে ওকে কিছু দিয়ে অবাক করে দিতে ভালো লাগে। নিনিতাও তাই করে।

ফোন রেখে কসমেটিক্সকর্ণারে এসে অবাক হয়। তিথি তার ড্রেসের সাথে অভির অর্ডার করা সেটটি মিলাচ্ছে এবং কানে লাগিয়ে সামনের আয়নায় পরখ করছে। ওর এসব দেখে কাউন্টারের সুশ্রি মেয়েটি অসহায় ভাবে আপত্তি করছে,

-আপনি অন্যটি দেখুন ম্যাম। এটি আর নেই। ভদ্রলোক আগে বের করতে বলে গেছেন। ঐতো তিনি এসেছেন।

অভি আর এগুতে পারে না। দাঁড়িয়ে পড়ে। তিথি মুখ ঘুরিয়ে অভিকে দেখে বিস্ময়ে হতবুদ্ধ হয়ে যায়। তারপর স্থানকাল ভুলে ছুটে এসে অভিকের দু’হাত চেপে ধরে উচ্ছ্বাসে উচ্চারণ করে,

-অভি! অভি! তুমি!

অভি অবাক হয়। কোনদিন তুমি করে থাক নাম ধরে ও তাকে ডাকেনি তিথি। কিযে এক ভালো লাগায় ও আচ্ছন্ন হয়। সবাই একটু কেমন চোখে তাদের দিকে তাকিয়ে চলে যাচ্ছে। অভি কাউন্টারের মেয়েটিকে সেটটি দিতে বলে। সেট নিয়ে বিল পরিশোধ করে তিথির হাতে দেয়। বলে,

-নাও এটা তোমার জন্য। চলো এককাপ কফি খাবে?

তিথি সেটটি নিতে নিতে বাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে ফের নিজেকে সামলে নেয়। বলে,

-চলো।

তারা একটি টেবিলে বসে। কফির অর্ডার দিতে যেতে অভি ওর হাত চেপে ধরে বলে,

-বসো; চলে যেও না প্লিজ।

তিথির শরীর কাঁপে অভির ছোঁয়ায়। সে বসে বসে বহুবছর গোপনে লালন করা মানুষটিকে দেখে। যে মানুষটি তার প্রতিটি স্পন্দনের সাথে মিশে আছে। যাকে না ভেবে কাটেনি একটিও মুহূর্ত।

অভি ফিরে এসে জানতে চায়,

-আমেরিকা থেকে ফিরলে কেন? নাকি যাওনি?

ছোট্ট করে উত্তর দেয় তিথি

-যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

-তবে বলেছিলে যে?

-সে তোমাকে আঘাত দেবার জন্য বলেছি।

-কেন?

-ভালোবাসতাম। চাইতাম খুব খুউব। কিন্তু তোমার চাপা স্বভাবের কারণে বুঝতে পারিনি। বলতেও পারিনি কিছু। তুমি ভীষণ নিঠুর।

-ভুল করেছো খুব ভুল করেছো। তুমি আজো একা?

তিথির চোখ ভিজে ওঠে। ও জানতে চায়,

-তুমি?

– একা!

-একা? আশ্চর্য!

বলতে বলতে তিথির মুখ উজ্জল হয়। চোখ দিয়ে জল গড়ায়। সে নিচের দিকে চোখ নামিয়ে ফেলে।

অভি সেদিকে তাকিয়ে অবস হয়ে যায়। নিনিতার মায়াময় মুখটা প্রচন্ড ভূকম্পনের রূপ ধারণ করে তার বুকটাকে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে। সেই সাথে টলকে দিচ্ছে বসুন্ধরামল।

রওশন রুবী : কবি ও কথাশিল্পী।

মন্তব্য করুন

এখানে মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন