কিছু মাস্কবাদী কবিতা ।। মেরুন হরিয়াল ।। পুবাকাশ

নাভিশ্বাস

ক্ষমতার স্বাধ এখনও জিজ্ঞেস করে 
নাভি থেকে কইমাছের মতো কানকো-দাঁড় বেয়ে 
কোনও অরণ্যাভিমুখে হারিয়ে যাচ্ছে নাভিশ্বাস।
বেড়ে যাচ্ছে পারদস্তর, দেয়াললিখন মুছে 
বিস্বাদে ভরিয়েছে গ্রাফিতি।
কোনও গুপ্ত প্রজাপতি মুছে দিচ্ছে সিঁদুর 
এমনকী যত্নে আঁকা সিঁথি?

নোটিশ

কয় যে…
    বিশাল-বিশাল ফুল ফুটছে
    নীল, জরদ, নয়তো শাদায়
নাক বন্ধ, বুঝি না
    কোন্​টা দেব কৃষ্ণচূড়ায়
    কোন্​টা জড়াবে রাধায়!

এদিকে পাপড়িও দেখছি না
    বদ্দা, কী জানি! কী কয় যে…
    বলে, দিল্লি হনুজ দূর আস্ত
    ঘোমটার নীচে নায়িকার মুখ
    অন্যদিকে নায়ক বলছে,
    ‘আহ, তু চিজ বাড়ি হ্যায় মাস্ত মাস্ত’…

    নীচে শুধু বোঁটা আছে
    কী করে দেখব ফুলের রং
    দেখব কীভাবে ফুল ফোটে!

ইন্দি, আবার
    ‘এই সাবধান, দাঁত লাগাবে না,
    চুষে যাও, দিয়ে যাও ব্লোজব’…
    লিখে রেখেছে ফুটনোটে।

লেবু

লেবুভ্যানের একদিকে আমি
অন্যদিকে তুমি। 
যথারীতি কালো নেকাবে
মুখ ঢাকা, চেনোনি।
লেবুর এত দাম! এত বেশি!
আহ, লেবু কেনোনি।
আড় ফিরে ডাক দিলে, ‘এই ট্যাক্সি’… 
লেবুর মতো সবুজ
    উঠে চলে গেলে।
হায়, আমারও কেনা হলো না!
তুমি চলে যাচ্ছ
    হুম, আমিও ফিরলেম
চলে যাচ্ছে লেবুগাড়িও।
কালো পিচের ঠিক নীচে কাঁদছে
কমলালেবুর মতো ম্যাকাডেম।

২০২০

একসুরে চিল্লাইয়া কই,
‘ডেঁইয়ার উদ্দি ডেঁইয়া যায়
ত ডেঁইয়া খবর ন পায়!’
আসলেই তো খবর নাই
        কেন?
বিষের উপর চড়ছে বিষ
বিষসম বিষ, বিষাক্ত
        সমকাম।

গাভিবৃত্তান্ত আবার!

ছফা, আপনে কই ব্রো?
এই দেখেন পতাকারা উড়ছে
পেঁ-পোঁ-পেঁ ডেকে ডেকে
    লদপদে পাজেরোর জন্য পথ চায়
    এসকর্টের ভ্যান।
    আপনি থাকলে হয়তো
    জুতমতো উপমা দিতেন।

    হাঁটুপানি, পোনপানি কিংবা গলাপানিতে
    দাঁড়িয়েও এই দৃশ্য দেখে আমাদের ভালা লাগে।

    গাড়ির ঠেলায় এগিয়ে আসা ময়লা পানির সুখ-সুখ ঢেউ
    ভেঙে পড়ছে, দুপাড়ে। আহা রে, যেন সুদের পর সুদ!
    আমাদের কেন যে এইসব ভালা লাগে!
    কোনও এক কৃকলাস্যবোধে
কেন যে হাতাই
আবিয়ান্যা গাভির দুধ!

মার্চ-আগস্ট ২০২০

মেরুন হরিয়াল : কবি ও শিল্পী।

2 মন্তব্য সমুহ

মন্তব্য করুন

এখানে মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন