তিনটি কবিতা।। অনন্ত পৃথ্বীরাজ।।পুবাকাশ


বিশ্বাস

বিধ্বস্ত শহরের কার্নিশে ঝুলেছে অন্তর্বাস
হারিয়ে খুঁজে ফেরো প্রিয় পুরনো বিশ্বাস।
যাপিত জীবনের কে কবে হিসেব পায়
খেলায় পরাজিত হলে নিন্দা ঠেকানো দায়।
যে আগুন জ্বালিয়েছ মনে তা নিভে না
কবিরা প্রেমিক হয়, ভালো স্বামী হয় না।


কোলাজ 

খুব সম্ভব আমি আর 
তোমাকে ভালোবাসি না। 
ফিরিয়ে দাও যত সর্বনাশ ।
স্মৃতিগুলো তুলে নেব ।


খয়েরি শাড়ি পরা মেয়েটি

মেঘের দলে বুনোহাঁসের বসবাস; 
আকাশের ফাঁকে তারারা ভীড় করে
রাত্রির অমানিশায় অশরীরী চোখ 
ওৎ পেতে থাকে কামনার নেশা
নক্ষত্রেরা মিলিয়ে যায় রাত্রির গুহায়
কপোত ঘরে ফেরে কপোতির তরে 
আইরিন ফেরে না ঘরে। 
 
কর্পোরেট হাসির ছলে মিশে যায় শরীরের ঘ্রাণ,
পারফিউমের ব্যবসা মন্দ বলে 
ছাকের আলী ছেড়ে দেয় মনোহারি দোকান। 
মেঘের ভেতর বালিহাঁস খেলা করে
আকাশের তারারা মুখ লুকায় বালিশের ওয়্যারে
তখনও আইরিন ফেরে না ঘরে।
 
সি-বিচে মানুষের কোলাহলে মিলিয়ে যায় ঢেউয়ের গর্জন 
দূর হতে কতশত জাহাজ চোখে পড়ে 
কত অচেনা শহর, নগর, বন্দর বয়ে ঢেউ আসে। 
কিনারে মোটেলগুলোয় ঢেউয়ের তালে নর্তকির নৃত্য চলে। 
এখনও আইরিন ফেরে না ঘরে।
 
উদরের গুদামে আগুন জ্বলে। 
অনাহারির চোখের ঝিলিক ফিকে দেখায়। 
রসুলপুরের রহিমুদ্দির মেয়ে আসমানির কথা মনে পড়ে
তখন আকাশে পালকের শব্দ
নীল আঁচলে খয়েরি শাড়ি পরা 
কতগুলো ক্ষুধার্ত কাক উড়ে যায়, সরে যায় দূরে-বহু দূরে। 


অনন্ত পৃথ্বীরাজ- কবি ও কথাশিল্পী। জন্ম  ৩০ অক্টোবর ১৯৮৭। পেশায় শিক্ষক।প্রকাশিত গ্রন্থ : ৪টি।

মন্তব্য করুন

এখানে মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন