গুচ্ছ কবিতা ।। খাদিজা ইভ
আর্তনাদ
উষ্ণতা খুঁজতে গিয়ে মাতাল হয়েছো নিষিদ্ধ ডাকবাক্সে,
অথচ আমার এ পোড়া শরীর দমানোর জলের অভাব।
কতবার কড়া গন্ধের লিপস্টিক ঠোঁটে লাগিয়েছি তোমাকে ভেবে;
দ্বিখণ্ডিত করেছি বারংবার নিজেকে!
তুমি আসোনি।
বিভেদ
বসন্তের আকাশে কিছু সিঁদুরে রং মিশে গেছে;
আঁৎকে উঠি,
যেখানে পায়ের আঙ্গুল রাঙাতে পারি না সেগুনের কচি পাতায়-
মন রাঙাবো কিভাবে?
আমি এমনই এক বিচ্ছিন্ন নাবিক,
গা ভেজাতে গিয়ে পেছন ফিরে তাকাই;
আমারও আকাশ আছে, অমাবস্যার।
চর্চা
দুপুর হলেই আমি নেমে পড়ি পুকুরে;
জলের সাথে চুক্তি করি,
আর জীবনের সাথে পরিচিত হই প্রতিনিয়ত।
গণতান্ত্রিক এই ব্যবস্থায় স্বৈরশাসনে ভরপুর থাকে শৈশব।
প্রাণ ভরে সাঁতার কাটতে না পারা বালকেরা,
ভ্রু কুঁচকে বিদায় দেয় খেলার সাথীকে।
সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ধুয়ে ফেলে শুকিয়ে যাওয়া ঘাম;
ষাটোর্ধ নারীর ঝুলন্ত স্তন বেরিয়ে আসে পরিধানের ফাঁকে,
পুরুষের শরীর ধুয়া জলে মিশে ফিসফিস করে মাছেরা;
ঋতুবতী নারী ঘষতে থাকে অস্পৃশ্য দেহ।
কতকিছু ঘটে যায় কেবল একটা ঘাটেই,
আমি তখনো চর্চা করতে থাকি জীবন।
চিরকুট
রাত কেটে যাওয়ার ফাঁকে আমরা যখন খুলে দেই ব্যথাদের দুয়ার,
দমকা হাওয়া এসে কেমন নেতিয়ে দেয় আমায়;
তুমি আগলে রাখো এই শূন্যতায়,
ফলজ বৃক্ষে ছুঁয়ে দাও তোমার আগমনী গান।
চিরকুটের জমিনে তুমি এক অভিজ্ঞ কৃষক ;
কেমন আলগোছে বপন করো বীজ।
ব্যর্থতা
উড়তে চেয়েছি বহুবার,
নারী হৃদয় স্রোতস্বিনীর মতো বয়ে চলে
শত হাহাকার শুনেও পেছনে তাকাতে পারি না।
তুমি আমায় আর ডেকো না প্রিয়__
হাহাকারে ভস্ম হচ্ছি রোজ
তোমার ঘরে আলো ছড়াবো এমন চাঁদ হইনি আজো,
আমিতো জোয়ার-ভাটাতেই পড়ে আছি;
বইতে বইতে লুকাই নিজেকে বহুদূর।
খাদিজা ইভ: তরুণ কবি।