বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতাগুচ্ছ
বাঙালী ও একটি প্রাণ।। দেবী আচার্য্য
ভোরের আলোকচ্ছটায়
ক্ষয়হীণ আশায় উজ্জ্বল স্বপ্নে
আনন্দে ঝংকৃত হয়ে
পাখির কলতানে
গাছের পাতায় পাতায়
ফুলের সুবাসে
মাটির কণায় কণায়
পথে -প্রান্তরে, পাহাড় -অরণ্যে,
নদী-সমুদ্রে,হৃদয়ে হৃদয়ে
সহস্রাবার প্রতিফলিত হয়
একটি নাম-
শেখ মুজিবুর রহমান।
বাংলার আজকের নবীন
বাংলার আজকের শিশু
বাংলার আগামী প্রজন্মের
প্রতিপ্রাণে স্থির রেখার বন্ধনে
জাগ্ৰত হবে প্রত্যয়ের আলো।
প্রশ্নের প্লাবনে দিশেহারা হয়ে
ইতিহাসের পাতায় পাতায়
সাঁতরে বেড়াবে হাতের আঙুল
প্রজ্বলিত তীক্ষ্ণ চোখ,
বিকশিত বোধ।
তার বুকের ভেতরে ছিল
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সবুজ মানচিত্র
যে মানচিত্রের স্বপ্ন ছিল
এক বহতা নদীর জনস্রোত;
যে জনস্রোতে যুদ্ধের অধীনস্থে
ত্রিশ লক্ষ বাঙালী –
দিয়েছিল প্রাণ
মা বোনের সম্ভ্রমহানিতে
কেঁপে উঠেছিল
স্বর্গ- মর্ত্য -পাতাল।
এই ভূখন্ডকে
ওরা বিষাক্ত করেছিল
ওদের বিষদন্ত দিয়ে
সেই বিষদন্তকে ভেঙে গুঁড়িয়ে
বাংলার জাগ্ৰত মানুষ
উড়িয়েছিল –
লাল সবুজের পতাকা;
বিজয় সম্ভাষণে।
ওরা নরপিশাচ থেমে থাকেনি
রাতের আঁধারে
পরিকল্পিত নকশায়
নৃশংসভাবে
হত্যা করেছিল যে প্রাণ
সে প্রাণ মর্মান্তিক ইতিহাসের
রক্তের বিন্দুতে বিন্দুতে
চিহ্নিত একটি নাম
শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধু ।। অনিন্দ্য জসীম
বঙ্গবন্ধু তোমার আমার
সবার প্রিয় নেতা
বঙ্গবন্ধু সোনার বংলার
মহান স্বাধীনতা
বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠ
সম্মোহনী ভাষণ
বঙ্গবন্ধুর মুজিব কোটে
সাম্যনীতির শাসন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
স্বাধীনতার স্থপতি
বাঙালিদের সবুজ হৃদয়
তাঁর চেতনায় উন্নতি
তুমি আছ।। হাফিজুর রহমান
সেইরাতে আকাশে কি মেঘ জমেছিল !
মাতাল হাওয়া ঝড় কিংবা তীব্র জলোচ্ছ্বাস
দুনিয়া-কাঁপানো কোন দুর্ঘটনার আবহাওয়া-বার্তা !
না। সবই তো ছিল ঠিকঠাক
প্রতিটি দিনের মতো সূর্যকান্তিও প্রস্তুত ছিল রাতের আঁধারে
একাকী নিঃসঙ্গ আলোর ঝরোকা যেন–
তবুও আঁধার খানখান করে ভোরের বদলে এলো
বুলেটের মরণ-চিৎকার দাহ ট্যাঙ্কের অশ্লীল উদ্ভট উল্লাস,
লজ্জায় ঘৃণায় অবশেষে ডুবে গেল চাঁদ।
ডুবে গেল স্বদেশ-প্রেম, ভালোবাসার পতাকার আলো
স্বাধীনতা ! তর্জনীর উদাত্ত আহ্বান, একটিমাত্র উচ্চারণ–
‘তোমাদের যার যা’কিছু আছে,তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো…’
আমরাও প্রস্তুত ছিলাম কবি, প্রস্তুত এখনো সর্বক্ষণ
আঁধারে অমেয় আলো রয়েছ তুমিও– জানি মহাত্মন !
এলিজি : বঙ্গবন্ধু ।। মাসুদুল হক
১.
আলো-নেভানো ধানমন্ডি
বাড়ির সামনে জলপাইরঙ গাড়ি
বাঙালি কণ্ঠে পাকিস্তানি ক্রোধ
অদ্ভুত আগন্তুক!
বাংলাদেশ ঘুমিয়ে থাকলেও
জেগে ওঠেন শেখ মুজিব
২.
ঘুমভাঙা শরীরে
তিনি হাঁটেন
বীরদর্পে হেঁটে সিঁড়িতে এসে দাঁড়াতেই
ঘাতকের গুলিতে ঝাঁঝরা তাঁর বুক
তিনি পিতা
করুণার চোখে তাকিয়ে থাকলেন…
৩.
গুলিতে মানুষের পরিচয় থাকে না
লেখা থাকে ঘাতকের নাম
বারুদের গন্ধ ইথারের সঙ্গে
ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত বিশ্ব
৪.
তাঁর শ্বাসের সঙ্গে শ্বাস নেওয়া
শিখেছিল বাঙালি;
সুখের সঙ্গে সুখ
হঠাৎ ধ্বংসস্তূপ!
সেই থেকে আমাদের শ্বাসকষ্ট শুরু;
১৫ আগস্ট বাঙালির কান্নার দিন!
বিনম্র শ্রদ্ধা