গুচ্ছ কবিতা।। পাহাড়ী ভট্টাচার্য।। পুবাকাশ
কার্যকারণ
আমার নির্লিপ্ততা ঘিরে আছে অগনন অভিমানের চাদর
আমার নিষ্পৃহতার নেপথ্যে জড়িয়ে রয়েছে অজস্র দহন
আমার নিষ্ক্রিয়তার অন্তরালে অব্যক্ত অযুত কথামালা
এই এক জনমে আর ফুরাবে কি তাবৎ দীর্ঘশ্বাস, হায়!
নিজস্ব দ্বৈরথ যত, ক্ষমা-ঘেন্না-ক্ষোভ; আপোষের দায়।
জীবন-তৃষা!
একটি মৃত্যু কানে কানে আমায়
অসংখ্য জীবনের কথা বলে,
একটি জীবন চুপি চুপি জানিয়ে রাখে
অজস্র মৃত্যুও বস্তুত কিছু নয়।
আমি অমৃতের এক জীবন চেয়ে
প্রতি মুহুর্তে অগনিত মৃত্যুকে
পদদলিত করি;
অামি ভয়হীন ভয়ের ভেতর
দ্বিধাহীন ছুটে যাই
মৃত্যুকে উপেক্ষা করে
পুণর্বার, জীবন-তৃষায়!
খোঁজ/দ্য সার্চ!
একটি বিকেল নির্নিমেষ কেটে গেল
গায়ত্রী সন্ধ্যাও মৃতপ্রায়
অবাধ্য দুপুর অতিক্রান্ত
প্রেমহীন; অযাচিত উপেক্ষায়!
যদ্যপি প্রতীক্ষার সুদীর্ঘ রাত
জেগে আছে মৌন চরাচর,
স্বপ্নভঙ্গের বেদনাসমেত
তোমায় খুঁজি অবিরত
তুমিহীন; আগ্রাসী শুন্যতার ভেতর!
গোয়ের্নিকা’র ভেতর
নিয়ত এক অন্তর্দহন
ক্ষতবিক্ষত করে আমায়
না গৃহ, না সন্যাস, না পুর্ণতা,
না বিপ্লব, না নির্বাণ, না ইতি
কিছুই হল না, তাই।
প্রথাগত সময়কে সাথে নিয়ে
প্রথাবিরূদ্ধ বাঁচতে চেয়েছি
ক্রমাগত স্রোতের বিপরীতে
দিতে চেয়েছি ডুবসাঁতার।
লাল গোলাপের জন্য লড়াই
এখনো আমাকে টানে
মানবিক সকাল, নিশ্চিন্ত দুপুর
প্রেমময় বিকেল চেয়ে
বিষাদের নীলে, বিরুদ্ধতার কালোয়
আর প্রতিরোধের লালে
যদ্যপি রাঙিয়েছি মন।
এক অন্যতর গোয়ের্নিকা’র ভেতর
আপোষের, পরাভবের গ্লানি-সমেত
বেঁচে থাকার এ দুর্বিনীত কাল পেরিয়ে
একদিন দৈবাৎ
ছুঁতে চাই মায়াবী নক্ষত্র,
স্হিতির শুদ্ধ আকাশ!
পাহাড়ী ভট্টাচার্য : কবি ও চিন্তক।