মোহাম্মদ খোরশেদ আলম

২০২০ আমেরিকার নির্বাচনী বছর । আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন । এ বছর কোভিড-১৯ মহামারীতে এমনিতেই আমেরিকার অবস্থা নাকাল । তারপর, করোনা ভাইরাস নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য ও মন্তব্যের কারণে নির্বাচনী জনপ্রিয়তার দৌড়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট কিছুটা বেকায়দায় রয়েছেন । তবে, যে কোন সময় ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশল তিনি জানেন । জনগণ কি চায় তা তিনি বুঝেন আর সে অনুযায়ী তিনি সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিবেন বলে সকলেই ধারণা করছেন । আমেরিকার স্বল্প শিক্ষিত বৃহৎ শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর সর্মথন এখনও ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে এবং তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে । তার সমর্থকরা অতি কট্টর । সেদিন, কোরবানী উপলক্ষ্যে একটি ফার্মের মালিকের সাথে কথা হলো । তিনি করোনা থেকে রক্ষার জন্য নিজে মাস্ক পড়েন না, যেহেতু প্রেসিডেন্ট পড়েন না এবং অন্যরা পড়ে থাকুক তাও পছন্দ করেন না । তাকে করোনার নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধির জন্য মাস্ক পড়া উচিৎ বলায় তিনি বললেন মিঃ প্রেসিডেন্ট তো এটা পছন্দ করেন না । এ দিয়ে তার প্রতি সমর্থকদের আবেগ বোঝা যায় । নির্বাচন এখনও তিন মাস বাকি । এর মধ্যে মিঃ ট্রাম্প অনেক নির্বাচনী ট্রাম্প কার্ড খেলবেন এটা নিশ্চিত ।

গত ২৩ শে জুন একটি নির্বাচনী ট্রাম্প কার্ড খেলেছেন । এরফলে, অনেক তার সমালোচক ভোটারও তার পক্ষে কথা বলা শুরু করে দিয়েছেন । এদিন প্রেসিডেন্ট তার এক নির্বাহী আদেশে আমেরিকান কর্মীদের সুরক্ষার জন্য ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত অন্যান্য ধরনের বিদেশী ওয়ার্ক ভিসা সহ এইচ-১বি ভিসা স্থগিত করেন । এরফলে, তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী বিদেশী মূলত ভারতীয় চাকুরিজীবীদের জন্য চরম দুঃসংবাদ বয়ে আনে । আর সুসংবাদ বয়ে নিয়ে আসে আমিকানদের জন্য । কারণ, H1 ভিসা প্রার্থীদের সাথে এদেশের লোকেরা উচ্চ বেতন সম্পন্ন আইটি চাকুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল ।

প্রতি বছর মোট ৮৫,০০০ H-1B visa ইস্যু করা হয় । তারমধ্যে ৭০% ভারতীয় এ চাকুরির সুযোগ নিয়ে থাকে । ফলে, আমেরিকার জনগোষ্ঠী এমন উচ্চ মজুরির লোভনীয় চাকরি থেকে বঞ্চিত হয় । তবে, আমেরিকান জনগোষ্ঠীর মধ্যে আইটি চাকুরির মেধা ও যোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে । সরকারী আনুকূল্য পেলে হয়তো তারা সে যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে । এটি নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার মতো উদ্যোগ ।

ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এবং প্রাক্তন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে তিনি নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি পেশাদারদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত এইচ-১বি ভিসার উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ তুলে নেবেন। এ মন্তব্য করে, জো বাইডেন নিঃম্চিত অনেক সমর্থন হারিয়েছেন ।

গতকাল, ৪ঠা আগস্ট, ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল চুক্তির জন্য এইচ-১বি ভিসা ধারক নিয়োগের বিরুদ্ধে আদেশে স্বাক্ষর করেন এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন
“Today I am signing an executive order to ensure that the federal government lives by a very simple rule, hire American,”
“As we speak, we’re finalising the H-1B regulation so that no American workers are replaced ever again. H-1B should be used for top highly paid talent to create American jobs, not as inexpensive labour programmes and destroy American jobs,” said Trump

মোদ্দকথা, এ আদেশের ফলে H-1B ভিসাধারীর পদ আমেরিকানদের জন্য উন্মুক্ত হলো । তাই,বাংলাদেশী আমেরিকান ভাইদের অনুরোধ করবো এ সুবর্ণ সুযোগটি গ্রহণ করার । সুযোগ বার বার আসে না । ঝড় এলেই আম কুড়াতে বেশি মজা । সে মজাটি গ্রহণ করার জন্য নিজেকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলুন ।

মোহাম্মদ খোরশেদ আলম: আমেরিকা প্রবাসী আইটি বিশেষজ্ঞ।

মন্তব্য করুন

এখানে মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন