ঈদ ও বৈশাখী পঙক্তিমালা 


পুবাকাশ


চাঁদ 🍂 মজিদ মাহমুদ

যখন চাঁদ উঠত তখন আমরা
আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতাম
তখন চাঁদও ছোট
আমরাও ছোট
সেও আলো-আধাঁরিতে খেত দোল
আর আমরাও বুবুদের কোলে-
আমরা যেখানে যেতাম
চাঁদও যেত সেখানে
আজ জেনেছি চাঁদ ওঠেও না ডোবেও না
আমরাই এক চিলতে চাঁদের মতো
নানা কলায় পূর্ণ হয়ে ক্ষয়ে যায়
দৃষ্টির সীমাবদ্ধতা ভয় থেকে বাঁচায়
মাথার উপর দিয়ে উড়ে যায় ভয়ঙ্কর ঝড়
অনেক দিন বন্দি রেখেছে গণ মৃত্যুর ভয়
যুদ্ধ দুর্ভিক্ষ সড়ক দুর্ঘটনা
অজানা কত কত রোগ
কুকুরের মতো মরণ লেলিয়ে রেখেছে
একদিন যদিও ধরে ফেলবে আমাদের
প্রতিটি সফল দিন হারিয়ে যাবে
পরিত্যক্ত দিনের গহ্বরে
তবু প্রতিটি ভোর আলাদ
প্রতিদিনের সূর্য আলাদা
এক চাঁদ ফুরিয়ে গেলে
আরেক চাঁদের উদয় হবে তার গর্ভে
এক ঈদ নয় আরেক ঈদের মতো
পুরনো খোলস ফেলে দিতে যদিও ভয়
তবু চাঁদের সাথে আমাদের সম্পর্ক অক্ষয়।

আকাশ কিনছি 🍂 মুজতাহিদ ফারুকী

এখন শুধু আকাশ কিনছি
কেনাকাটায় কেবলই ঠকে যাই, সঙ্গতিও গেছে সেই কবে!
হাজার শুকরিয়া অনলাইনের আবিষ্কর্তাকে
অনেক আকাশ মেলে তাতে।
একেকটি আকাশ কিনে গুছিয়ে রাখি বুকের ভিতর,
কৌতুহলী করোটির জটিল পকেটে ।
অনেক তরঙ্গ গেছে বয়ে, আর আমি গড়িয়ে এসেছি ভাটি গাঙে।
যা কিছু অহংকার ছিল, দোষেগুণে, যা কিছু গ্লানি,
সব এখন মোহনার চুম্বক টানে বেসামাল।
তারাখচিত একেকটা আকাশের জন্য এখনও
আদিখ্যেতাপূর্ণ যেটুকু আকুলতা
সেইটুকু পথের পাঁচালী, শেষের কবিতা।

বৈশাখ 🍂 কাজী জহিরুল ইসলাম

এসো হে ঝড় এসো স্থবির পৃথিবীকে ঝাঁকুনি দিয়ে যাও
আবর্জনা যত জমেছে এতোদিন সকলি উড়ে যাক
সঘন বর্ষণে তপ্ত মৃত্তিকা শীতল করে দাও
অমিয় ধারাস্রোতে ভিজিয়ে কাদা করো যে মাটি পুড়ে খাক।

আবর্জনা যত জমেছে এতোদিন সকলি উড়ে যাক
কৃষ্ণচূড়া শাখে যে লাল ফুটে আছে অর্থহীন সে-কী?
প্রণতি কাম্য না রুদ্র উল্লাসে নামো হে বৈশাখ
এ-ধরা প্রান্তরে দূর্গামূর্তিতে তোমাকে যেন দেখি।

কৃষ্ণচূড়া শাখে যে লাল ফুটে আছে অর্থহীন সে-কী?
এ-উপমহাদেশে রুদ্ররোষে আছো স্মৃতির বৈভবে
উড়িয়ে নেবে জড়া দ্রোহের অক্ষরে তোমাকে আমি লেখি
হোক না কিছু পাখি আজকে নীড়হারা ঝড়ের তাণ্ডবে।

এ-উপমহাদেশে রুদ্ররোষে আছো স্মৃতির বৈভবে
আম্রকলি আর জামের কচি ডালে পুষ্ট হয় ফল
দারুণ উচ্ছাসে তোমার ছোঁয়া লাগে পত্র-পল্লবে
প্রতিকী মঙ্গলশোভাযাত্রা রয় স্মৃতিতে উজ্জ্বল।

আম্রকলি আর জামের কচি ডালে পুষ্ট হয় ফল
বণিক ঘরে ঘরে খুলেছে হালখাতা পুরনো মুছে দাও
নদীর মরা বাঁকে তীব্র স্রোতে ব্যেপে আসুক নবজল
এসো হে ঝড় এসো স্থবির পৃথিবীকে ঝাঁকুনি দিয়ে যাও।

রৌদ্রশাখা 🍂 ফেরদৌস নাহার
 
বিরল তীক্ষ্ণ রৌদ্রশাখা 
বল্লম হয়ে গেঁথে যাচ্ছে 
পাঁজরের ভাঁজে
বিরল তীক্ষ্ণ রৌদ্রশাখা 
আমার হয়ে ছুটে আসছে
আমার কাছে
 
ধাও উদাত্ত, ধাও গান গাওয়া
দূর প্রাণপাড়ে হু হু আনন্দ
এভাবে কখন উঠছে ফুলকি
গানহারা নাচ, নাচের দুলকি
বিরল তীক্ষ্ণ রৌদ্রশাখা 
আমাকে নেবে না
নিয়ে যাবে পাখা
 
জেগে জেগে দেখো ঘুমিয়ে পড়ছে
ফের জাগাবার স্বপ্ন গড়ছে
সাধগাঙ্গার দু’কূল ধরে
ছুটে আসছে বল্লম একা
বিরল তীক্ষ্ণ রৌদ্রশাখা 
নেবে না কিছুই
নিয়ে যাবে পাখা

বোশেখি হুলুস্থু  🍂 মুজিব রাহমান

ঝনঝনিয়ে বাজে বোশেখ
ঝনঝনিয়ে বাজে
দমকা বাতাসে বিজলি চমক
সকাল দুপুর সাঁঝে।

ঝড়ে বৃষ্টিতে নব সৃষ্টিতে
সুর নন্দিত গানে
কোটি বাঙালি মঙ্গল আলোয়
হাঁটে সম্মুখ পানে।

কালবোশেখির হঠাৎ ঝড়ে
চৌচালা ঘর পড়ে
খড় ও কুটোয় ঠুনকো আবাস
কৃষক আবার গড়ে।

বৈশাখে ঝরে পাতা থরেথরে
বৈশাখে ঝরে ফুল
বৈশাখে ভাঙে কচি ডালপালা
তুমুল হুলুস্থুল!

শাদা উৎপল  🍂 খৈয়াম কাদের

তোমার হাসিতে
জলের তরঙ্গ বয়ে চলে
বাতাসের দেহে জাগে
রিরংসা নৃত্যের কল্লোল।

ফুলের অধিক শত
সৌরভ ছড়াও
স্পর্শে ঋদ্ধ কর
প্রেমিক-চিত্তের ভূমি ;
বিহঙ্গ সঙ্গীত হয়ে
নিসর্গ মোহিত কর
কামের কুর্শিতে ব’সে
কবিকে আবিষ্ট কর
যামিনী পদ্যের আহবানে।

নগরের দোয়েল- দুহিতা তুমি
নাগরের তুমি স্বপ্নপরী
চোখের জরিতে তোমার হৃদয় ফোঁটে
কড়িতে হয় না তার কোনো লেনদেন
শস্যের সফেন রঙে
প্রণয় সোহাগে গড়ো লোলকান্ত বাড়ি।

কাব্যের কৌমুদী হতে চেয়েছিলে তুমি
যদিও নিজেই তুমি
অপরূপ এক কবিতার ভাঁজ
কলমের নিবের মতো নিরন্ত বর্ণধারা:
তোমার অধরে চাঁদের ভাস্কর্য ভাসে
দূরের আকাশে ওড়ে
শাদা উৎপল,
কালো এক বালক তবু
তোমাকেই ডাকে
হৃদয় অলিন্দে আঁকে
তোমারই ছবি অবিরল।

ঈদ ও হারানো সোনার পাখি  🍂 মহিবুর রহিম

কত শত বছর পেরিয়ে গেছে
সময়ের যান্ত্রিকতা পেয়েছে নতুনতর গতি
আমি এই ক্ষুদ্র বুকে ধরে রাখি কত আশা
যা আমার অতি পুরাতন অমূল্য সম্পদ
আমি বুক ভরে রাখি কত প্রেম
যার ডালপালায় কখনো কখনো আসে রঙিন ফুলের সমারোহ
কোথা থেকে একটা সুখের প্রজাপতি উড়ে এসে বসে
আমি প্রায় নির্বাক লোচনে তাকিয়ে থাকি
আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে উপলব্ধি করি
যেন নিস্তরঙ্গ সাগরে জাগে ঢেউ

কতবার অতীতকে একটা হারানো সোনার পাখি ভেবে বিষণ্ণ হয়েছি
কিন্তু আমার আশার চারাগাছে এলো বসন্তের সওগাত
আমি অতীত ও বর্তমানকে দেখলাম এক মহা সম্প্রীতির ময়দানে
যুদ্ধ ভুলে মহা ক্রান্তিকাল ভুলে
মারি ও মড়কের বিষণ্ণতা ঝেড়ে
সে আমাকে টেনে নিয়ে যায়
সেই শহিদি ঈদগাহে
আমি দাঁড়িয়ে থাকি শুদ্ধতম লোকারণ্যে
দেখি আমার অতীত ও বর্তমান
সব রকম ভুল ও বিবাদের রাস্তা পেরিয়ে
মিশে যাচ্ছে পবিত্র প্রাণের সান্ত্বনায়

আজ যেন সত্যি ফিরে এলো সেই হারানো সোনার পাখি
মনে হয় যেন তার গান আমরা কতকাল শুনিনি !
আমি তার পালকের অপার্থিব গন্ধ শুঁকি
তার অনন্য বিশ্বস্ততার বুকে হাত বুলাই
আর অন্যরকম আনন্দে ভেসে বেড়াই…

বৈশাখ নামচা  🍂  রওশন হাসান

পায়ে পায়ে পিছু ফেলে আসা বিস্তীর্ণ পথ সমতল
আগমনী বারতায় পাখিদের কোরাসে সমুদ্যত বৈশাখ
মেঘের বিপরীতে দাঁড়িয়ে রোদের নতমুখ প্রস্থান
আকাশের কিঞ্চিৎ দৈর্ঘ্য নিয়ে বয়ে যাওয়া নদী ভাস্কর l
ভেবেছিলাম আঁকবো বিম্বিত তোমার নবান্ন মুখ
অসমাপ্ত সে ইচ্ছে পান করবে নিসর্গ চারিদিক
তুমিআমি মুখোমুখি দূরতম পরস্পরের দৃষ্টিপাঠে
আমি চেয়ে চেয়ে মিলে যাবো বেলাশেষে
গোধূলির নৈঃশব্দ্য নেমে আসা অবধি l
হৃদয়ে অনুরণন শৈশব অলিন্দে দুলে ওঠা
আমার সহস্র বিচ্ছেদ পার্বণ
সেই কবেই হয়েছে পুরাতন আচ্ছন্ন ঝরাস্মৃতি l
আমি অরণ্যময় হবো, না’হয় ফুটবো লু হাওয়ায়
নাগরঙ্গ বুণোফুল হয়ে
সব চাওয়া নাই যদি হলো মিলনামুখী স্রোতাশ্রয়
তবুও বিদীর্ণ আকুলতায় কেন স্বেচ্ছা এ পরাজয় ?

বৈশাখী-ফুল 🍂 রওশন রুবী

রঙ রঙ কাচের চুড়ি, দুল আর বাহারি পোশাক,
সূর্যের মতো টিপ, চুমকি, পুথি রকমারি, ঠোঁট পালিশ,
গেঞ্জি,শার্ট, প্যান্ট, তেল চিটচিটে চুল,
চটি, ফ্যাসানী জুতো ফসলের মাঠ ফেলে ,
নদীর ধার ফেলে ছুটছে কোথায়? কেন?
কী দেখতে এই দল জনপদ, গঞ্জে দিচ্ছে হানা?
ঘাতকের ছুরির আঘাতে পড়ে থাকা দেহ?
জেল ফেরত বিজ্ঞান শিক্ষক?
ধূ-ধূ প্রান্তর ছাড়িয়ে চলে যাওয়া নৈরাজ্য?
কী দেখার আগ্রহে সুপ্রীয় কিশোর কিশোরী
ছোট ছোট ভাই-বোন নিয়ে কলকল, খলখল
দমকা হাওয়ার বেগে পেরিয়ে যাচ্ছে বেলা,
গ্রীবা বাঁকিয়ে ডাকে একাকী শালবৃক্ষ,
ডাকে অবলা-মেঘ, ভিরু ভিরু জানালার কাচ;

ওরা যে ওরাই; দলে আরো যোগ হয়;
বেগ আর আবেগ মিলে ভয়ংকর সুন্দর,
নেচে গেয়ে ডমা-ঢোল ফুর্তিবাজের দল;
মাঠ, বন পেরুতে পেরুতে চির চেনা গান-
” এসো হে বৈশাখ, এসো এসো…”
ওহো ধ্বনি কীযে দূর্দান্ত! এই যাত্রীরা জানে।

আজ ওরা অপরাজেয়, আজ ওরা উল্কা,
আজ ওরা খরস্রোতা, সহস্র সহস্র আনন্দ-তিলক,
ফুটে আছে বুকে বুকে স্মৃতিময় ক্যানভাসে,
ধর্ম বর্ণ ভেদে মানুষ ও মানুষের শেকড়ে।
ওরা মিশে ধূলোয়, ওরা কিনছে বাতাসা, মুড়ি-মুড়কি, গুড়ের জিলেপি, পেঁপোঁ বাঁশি, শখের হাঁড়ি,
টেরাকোটার জিনিস-পত্তর, টেপাপুতুল, কাটারি, ছুরি।
ফানুস পরাধীনতা, উদ্যাম খুশি।
হারাচ্ছে দল থেকে কেউ। কেউ বা নাগরদোলায,
চরকি, চেয়ার, বাইক খেলা দেখে দেখে
মানুষের ভিড় ঘেঁষে ঘেঁষে এমাথা ওমাথায়।
কোথায় এখানে মহামারী? কোথায় রক্ত চোখ?
কোথায় বিশ্ববাজারের অভাব-অনুযোগ?
ওরা মেঘ হয়, ওরা বিদ্যুৎ, ওরা বৃষ্টি হয়, ওরা পাখি,
ওরা বাঁশি হয়, ওরা চরাচরে ওড়ে, ওদের উড়ু উড়ু চুল, বৈশাখী-ঝড় ফুল, ওদের বাঁধভাঙা হাসি;
বোশেখ গ্রীবা দুলিয়ে বলে ভালোবাসি, ভালোবাসি।

বিকেল নুয়ে পড়ে, ছুঁয়ে পড়ে;
চুমকির জামা জুতোয় সেই চকচকে আলো
কারো কারো চোখ চমকালো; কেউ বা দেখলো
সার্কাসের রঙ ঢং করা বিনোদন বিকানো মানুষ,
আজও সুগভীর, গোপনে-আপনে বেড়ে বেড়ে ওঠে।
আহা! শৈশব, কৈশোর ঘেমে নেয়ে ওদের ভেতরে মিশে। ওরা ক্লান্তির ছিটেফোঁটা ফেলে, পেছনে সুরকি-ধূলো, মেঠোপথ কখন ফুরালো! কখন সঘন আবেগে
মথিত হতে হতে সামনের দিনের দিকে
এগিয়ে রাখে আবারিত দূরগামী পদক্ষেপ।
জানে না দূরন্ত, জানেই না,
ওরা ছলাকলাহীন ছুটন্ত নতুন দিন।

একটুখানি অভিমান হলে  🍂 রেদওয়ান খান
 
কতবার ইচ্ছে করেছে, একটুখানি অভিমান হলে, কারো উপরে– কোনও কারণে,
দৌড়ে পালিয়ে যাবো–
যে-রকম ধুলো মেখে এলে– সন্ধ্যায়, চিকন কঞ্চি হাতে মায়ের দৌড়ানি খেয়ে পালিয়েছি !
পুনরায় পালাতে পালাতে খোলা পাবো অন্ধ-জোছনায়– তোমারই শিউলি-দুয়ারখানি
 
একবুক অভিমান পাঁজরে গেঁথে নিয়ে সাত আসমান ঘুরি আমি– একা
চৈত্রের হলদে-ঝিলিক-রোদ-পোড়া শিমুলের তুলো
কখনও কি ফিরে পায় ছেড়ে-যাওয়া শালিক ও শিশিরের গান ?
 
কতবার ইচ্ছে করেছে, একটুখানি অভিমান হলে, কারো উপরে– কোনও কারণে,
ধুনুরি শব্দের মতো, মনুষ্যহীন অলস দুপুরে বেজে উঠবে তুমি
আর আমি
দিশেহারা বালকের মতো আছড়ে পড়বো জ্যোৎস্নার গন্ধে মাতাল তোমারই বুকে
তারপর ধুঁকে ধুঁকে ভালোবেসে যাবো– শুধু ভালোবেসে যাবো !

ইশান মিস্ত্রি হাটে  🍂 সৈয়দ আহমদ শামীম

বড় বিসর্জ্জন দিয়ে আমি বৈশাখ উজ্জাপন করেছি।
চুরাশি সালের কম না,ইশান মিস্ত্রি হাটের কাছে কর্ণফুলীর এক খাল লগ্ন মাঠে বৈশাখের মেলায় পরপর সাতটা পাঁচ পয়সা পানি ভর্তি বালতির তলায় রাখা কাচের শিশিতে ভুল প্রক্ষেপণ করে আমাকে দেউলিয়া করেছিল জসিম নামে বেগমজান স্কুলের এক প্রাইমারি সতীর্থ।
জীবনের প্রথম পরোক্ষ জুয়াড়ির সেই বেদনাদায়ক স্মৃতি পাঁচ পয়সা হয়ে চোখে ঝুলে আছে। সিসিং ফাঁক সিংসং নামে এক অ্যাক্রোবেট বাঁশের খেলা দেখাত। চেহারা হোচিমিনের মত। তার বাড়ি নাকি আনোয়ারা,শুনেছিলাম। কত দিকে কত মেলা। পকেটে নাই দুই পয়সা। আনন্দের সীমা নাই। মাটির হাড়ি গাড়ি বাঁশী হাডাগজা বাতাসা বেলুন কখনো গরুর লড়াই।
চারুকলা ছাড়া সব ছিল। এখন ককসীটের হাতি পেঁচা সাপ কুমির বিলাই বেজি আরও অপরিচিত জিনিসপাতি লাইন ধরে মিছিল করে চলে যাচ্ছে মঙ্গলের দিকে।
চুরাশি সালের ৩৫ পয়সার এখনের বাজারমূল্য একদম কম হবে না।

একটা ঈদ 🍂 সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব

পৃথিবীতে এলো নতুন জামার মত একটা ঈদ
অনেক দিনের পরে রঙিন হয়েছে মৃত জনপদ
আহা! গাছগুলোর সবুজ পাতায় পাতায় হাসছে ঈদ
ভিকারীর কোলে কেমন জ্বলজ্বল করছে একটা ঈদ

একটা ঈদ রেদওয়ানের বাবড়ির মত ঝুলছে
কমলাপুর ষ্টেশনে
জাকির আবু জাফরের পাঞ্জাবীর মত চকচকে ঈদ
বাসে, লঞ্চে, বিমানে দারুণ গতিশীল
একটা ঈদ কেমন সুঠাম আফসার নিজামের গোপের মত।

বহুদিন – রজনীর পরে একটা ঈদ,
একটা ঈদ পদ্ম ফুলের মত হাসছে জেরুজালেম থেকে মক্কার হেরেমে।

একটা ঈদ গ্রামের রাস্তায় ভাঁট ফুলে
শুদ্ধ সাদা হয়ে ফুটে আছে।

আমি ঘরে ঘরে বিলাবো ভাঁট ফুল
একটা শুদ্ধ নরম ঈদের মত।

কে অমন ভাসায়া নেয় 🍂 রেহেনা মাহমুদ

খালি নিদ আহে মোর।
তন্দ্রায় আধাবোজা চোহে দেখি
পূর্ণিমার আলো ঢুইকা পড়ে
মোর দবজ ঘরের বিছানায়।

সে আলো নাচন দেহায়
শরীর ‘পরে,
অন্তর জুইড়ে
আধাবোজা চোহের ভিতর
এক পায়রা ডাহে-
বাকুম বাক।

এ ঘুম-ঘুম
এ ঘোর-ঘোর
রুপালী জোসনায় ভাইসা যায় ভিটা আমার।

কে অমন ভাসায়া নেয় বেবাক?
কে অমন ভাসায়া নেয় ভিতর- বাহির?

দহন 🍂 মাসুদুর রহমান মাসুদ 

দহনের ছিদ্র থেকে 
জেগে ওঠে দেখি,
এক পলল সমভূমি যাপিত সময়,
রৌদ্রের ছোঁয়াই তামাটে শরীর। 
মাঠের আধার কুঁড়তে – কুঁড়তে 
মানুষ ও হঠাৎ  বারুদ হয়!
আচানক সময়ের কাছে হাটুগেড়ে
বসে পড়ে।

ক্ষণে -ক্ষণে বিস্ফোরিত হয়
মহামারী,যুদ্ধ  পৃথিবীর চেয়ে ভারি 
অভাবি সংসার! 
ক্ষীণ হয়ে আসে হাতের তালুতে
সঞ্চিত ভালোবাসা।

১টি মন্তব্য

  1. সুন্দর আয়োজনে থাকতে পেরে ঈদ হয়ে উঠল আরো মুখরিত।পড়লাম সবার লেখা। সবার জন্য ভালোবাসা।

মন্তব্য করুন

এখানে মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন