আবু মুসা চৌধুরীর
প্রান্তরের সন্মোহন
বিমূর্ত মুহূর্ত এই অধিষ্ঠান, যার অন্য এক
চেতনার রন্ধ্রে- তাই দিনলিপি মুখ্য ও মুখস্থ
সমস্ত শিথান জুড়ে অগ্নিঝড় আহত আত্মার
মোলায়েম প্রণোদনা হয়ে যায়, হয়তো বা
বাহ্যত বিদীর্ণ, বিধ্বস্ত, ছায়া…
সমূহ প্রভাহ ভেঙ্গে প্লাবনের তোড় ধুয়ে দেয়
অবিনাশী ও আহত আত্মার যে ক্ষত
সেইভেদ রেখা ভেঙে ভেঙে ভেঙে…
যেহেতু জাগর জোৎস্না হেসে ওঠে
প্রান্তরের সন্মোহনে
চৈত্রের চৈত্য কবর বা পতেঙ্গা বৃষ্টির তরবারি
তোমারা নিশ্চয় এক স্তর থেকে আরেক স্তরে বিচরণ করবে
(আয়াত ১৯, সুরা ইনশিকাক)
যেহেতু প্রত্যহ শব্দে জল-কাদা-রক্ত-পুঁজ
চ্যুত চাকরির মতো লুপ্ত বহুর্ভুজ।
থমকে থাকা চৈত্রে, যে কোনো চৈত্যের পাশেই
জীবনানন্দ বা উৎপলের সামনে
কবর বা পতেঙ্গা, নচেৎ
বৃষ্টিত রবীন্দ্রনাথ
মানে
নিশ্চয়ই নি:শংসয় তরবারি
ধারাপাত
সম্পর্কগুলো পুনবির্নস্ত হবে। জীবনের জাফরান
ছড়িয়ে যায় পথের ধুলোয়। আহা, গত জনমের
পাপ প্রকৃত জাতিস্মর। পারানির কড়ি ফুড়িয়ে
যাওয়ার পর বিনাশের অভিযাত্রা। এ যেনো জন্মের দায়।
বিসর্জনের আগেই শুরু হয়ে যায় আয়োজন,
যঞ্জ। যে প্রান্তে দাড়িয়ে আছে ভবিষ্য বলয়, তার
পাদপীঠে পুনর্জন্ম। অতিক্রান্ত সময়ের দিনলিপি।
তবুও, মৃত্যু মানে এক একটি নগর ও সভ্যতার
বিলয়। গ্রাম পতনের শব্দ ও আরণ্যক আবাহন।
পুনর্বার স্রোত বয়ে যাবে ভরাট বরষার প্রাণে-এই
বোধ তবু জেগে থাকে আমাদের এই তুচ্ছ ধারাপাতে।
এই ক্ষার এই ক্ষুধা
যে যাওয়ার, সে চলে যায়।
শত রোদনেও ফিরিবে না খনক, কখনও
চৈতন্যগলির গুল্ম-ঢিবি আর
মুদ্দাফরাসের মনও
বাদাম পাতার কানে অনর্গল বলে যায়
এই ক্ষার,এই ক্ষুধা- ভূমণ্ডলায়ন
কী অর্থ বহন করে!
অতপর ক্লান্ত হরিজন।
দুধচোর
রাত্রি ঘনায়
মধুপগন্ধা
অলকানন্দা
ফাঁদ,
পাতাদের আঁড়ে
বিহনে, বিথরে
তুই, দুধচোর
চাঁদ ।।
আবু মুসা চৌধুরী : আশিদশকের কবি।