পদাবলী
ক্যামেরা চলছে।। শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস
আর
বিষ পিঁপড়ের সারির চলমান মুহূর্ত।
ক্যামেরা চলছে
এবং
ফরাসি অভিনেত্রী
তখন
সমুদ্রের জলে চন্দন বেটে অসুন্দর কোনো অ্যাকাউন্টে ভাইফোঁটা দিচ্ছে
আর
তখনই ছুটে চলে এলো
দলমা পাহাড়ের গায়ে পাথরের মেঘ।
কিছু
বোঝা
না বোঝার ভেতরে
ঐ-এর
ঐরাবতের চলন্ত চেহারাখানা
অদৃশ্য হয়ে গেলো
কৃষ্ণপক্ষের আলোতে।
এক
অনালোকিত
গাড় অন্ধকারের মাঝরাতে
বাথরুমের ওডোনীল গন্ধের স্বাদ
আমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এলো
কথা-সরিত-সাগরে।
আত্মকথনের পাঠকের কাছে
যোগ অঙ্কের যোগচিহ্ন নিয়ে
আমিই সেই
হন্টন পথ
জেরুজালেম থেকে জেরুকো…
সাইকেল।। অনন্ত পৃথ্বীরাজ
বৃষ্টিপতনের সাথে ময়ূরের নূপুর বাজে
আমি কানপেতে শুনি আর্তের আহাজারি
পীড়িতের কান্নায় কেবলি বাতাশ ভারি হয়।
সাইকেল চালিয়ে যাও, হে বিধাতাপুরুষ
জীবনের অলিতে গলিতে সাইকেলের সাইরেন বাজে;
মুক্তপাখির ভাষা-সংস্কৃতি সাইকেলের রিংটনে।
‘মাছের মায়ের পুত্রশোক’ আছে জেনেও তোমরা
মৎস্য ভক্ষণ কর,
মানুষের সচেতনতায় একদিন কেটে যাবে সব অপরিনামদর্শীতা।
গবেষণার কলাকৌশল রপ্ত করে দেখে নাও, পৃথিবীর কৌণিক দুরত্ব।
আমি বাতাশের উষ্ণতা মেপে রঙিন রোদচশমা কিনব।
আঁতুড়ঘর থেকে বেড়িয়েছেন যে মা-জননী কেবল
তার কাছেই বাঁধা আছে প্রসব বেদনার ছাপ।
তুমি কী করে বুঝবে মা হওয়ার কষ্ট!
সন্তানের মুখ মাতৃত্বের গৌরব বাড়ায়।
বিষণ্ণ পাখায় মেখেছি দগ্ধরোদ।। অরণ্য মজিদ
একদিন তোমার চোখে মায়াময় মেঘ দেখে
তার ছায়াতলে দাঁড়ালাম।
সরে যাওয়া মেঘের মতোই সরিয়ে নিলে
তোমার অস্থির দু’চোখ।
আরও একদিন আমার পথযাত্রা থামিয়ে
তোমার চোখে চাইলাম,
চৈত্রের কাঠফাটা রোদে পুড়ে গেলো
আমার চোখের সাহস।
বিতাড়িত আমি ডানায় ডানায় ঘুরেছি তবু
তোমার আঙ্গিনার ছায়া বন, জলাশয়।
বিষণ্ন পাখায় মেখেছি দগ্ধরোদ
পুড়িয়েছি পিপাসার পিঠ।
পৃথিবীর বুকে রোদ্র ছায়ায় খেলা দেখে দেখে
বুকে বেঁধেছি ধৈর্যের বাঁধ।
ভাঙ্গা নীড়ে বসা পাখিদের ঠোঁট চুরি করে
হয়েছি অসাধ্য কারিগর।
অপেক্ষামান আমি একদিন ঝরাবোই
তোমার চোখে শ্রাবণ মেঘের দিন।
বৃক্ষের মতো – তরুর মতো তোমার আঁচলের ঘামে
গজাবো স্বপ্ন শস্য শ্যামল।
একদিন দেখবে সবাই আকৃষ্ট চোখে
তোমারি বুকে কত সুন্দর আমি
ভালোবাসার এক থৈ থৈ মাঠ।
অদৃশ্য চাবুক ।। মাসুদুর রহমান মাসুদ
ভারাক্রান্ত পৃথিবীর মুখ
কুয়াশার মতো ঝরছে,
মহামারী অদৃশ্য চাবুক!
চারিদিকে জমে আছে
মানুষের বিদ্রুপ,বিচ্ছিন্ন স্তূপ।
অদ্ভুত রহস্যে ঘেরা,
পৃথিবীর রূপ।
মাঝে প্রেম-আশা -স্বপ্ন সৌধে ঘেরা
মায়াবী লোলুপ।
মানুষেরা এই সবে দিশেহারা।
মানুষের ভালোবাসা হৃদয় গভীর
কাহারো মনের ঘর পাষাণ প্রাচীর।
যারা চলে গেছে গত প্রাণ,
তাহাদের কীর্তি,
পথে পথে রয়েছে অম্লান।
তাহাদের ঘ্রাণ আজ
আলোড়িত করে,
সকলের প্রাণ।
আনন্দআশ্রম।। বাসব রায়
ভিন্ন সরগম নীরস রক্তেও আবেশ ছড়ায়
সুরের খেলায় আন্দোলিত ভিতর বাহির
অবসন্ন মেঘেরাও শ্রাবণী হয়েতো নামে
অচেনা সুখ-বাতাস কাছাকাছি কোথাও
উধাও অন্তরে খেয়ালি বাঁশি বেজে ওঠে
আলাপে আলাপে মোহিত হয় চারপাশ
গড়ে ওঠে এক কাঙ্ক্ষিত আনন্দআশ্রম
কবিতা।। রেজাউল করিম রোমেল
কবিতা…, তুমি কি বলোতো?
তুমি আমার স্বপ্নে দেখা- ডানাকাটা পায়রা
অথবা উজাড় করা ভালবাসা!
তুমি কি উত্তাল সাগর জলধারা- জলচ্ছ্বাস বান-দুঃখ
নাকি আনন্দ, সমতল সবুজ বনভূমি মনভূমি ?
নাকি আমার আকাশ কুসুম কল্পনা।
কিংবা আকাশের বুকচেরা চিৎকার?
নিঃস্পাপ ফুটন্ত গোলাপ অথবা
তুমি কি মায়া, বলো- নাকি ছলনাময়ী
নাকি ভালবাসার অপূর্ব এ শব্দাবলী?