ফেরদৌস নাহার’র তিনটি কবিতা।। পুবাকাশ
নামের নকশা কাটা নামে
নৈঃশব্দ্যের ভিতর কেউ হেঁটে যায়
যেতে যেতে পথে কাগজ বিছিয়ে দেয়
সেকাগজে কয়েকটি নাম লিখা থাকে
আর তা রূপ নেয় ইস্তিহার ইস্তিহারে
বসন্ত আচানক কাছে এসে খুঁজে যায়
ডাক দেয় পথে পথে লিখে রাখা নামে
সেসময় বেচা-কেনায় বিভোর ছিল যে
সেও চমকে তাকায়, বলে- বেশ তো!
কোথা থেকে আসে এসব অদ্ভুত মানুষ
অদ্ভুত যাত্রা পথে ধাক্কা দিয়ে জাগায় সব
থমকে যাওয়া পৃথিবীর কোলাহল, বিবৃতি!
নেচে নেচে বলে- যতই যাওনা কেন দূরে
বনবাস শেষে চলে এসো মাটির বাতিঘরে
আঁধারের দুহাতে গড়া দিন-রাতের মাঝে
শতাব্দীকাল, নিঃশব্দ পাতাল, অর্থহীন এলোমেলো
গানের মানে নিয়ে নতুন ইস্তিহার লেখে নাম
বিছানো কাগজে কেউ শুয়ে থাকে
সেই নাম সাথে…
জীবনানন্দ কারে যে খোঁজে
ধর বারবেলা, উঠোনে নেমেছে শীত
জীবনানন্দ খালি পায়ে ধরেছে পুবের গীত
গীত জুড়ে বরিশাল বরিশাল মেলা। ধর
লাবণ্য ডেকে চলছে-হ্যাঁগো কোথায় গেলে!
জীবনানন্দ জানেই না কলকাতা কোনো দিন
বরিশাল হবে কিনা
সবুজ জানালা দিয়ে দেখা ওই দূরের নদী
তার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে আঁকা হল ছবি
মানুষের চৈত্রদিনে বাতাসের শ্বাসকষ্ট দিন
অনেক করেছে ঋণী অনেক দিয়েছে শুভকাল
ওপারে উলটানো নাও জলে ডুবে বুদবুদ তোলে
সেখানে সারাবেলা জীবনানন্দ কারে যে খোঁজে
লাবণ্য ডেকে চলছে-হ্যাঁগো কোথায় গেলে!
মৃত্যুও জোকার হয়ে ওঠে
পরিত্যক্ত অন্ধকারে খুঁজে পেলাম একজোরা পুরানো জোকার। কিছু বলার আগেই তারা তাদের মলিন বিচিত্র পোশাকের ভেতর থেকে বের করে আনে অখণ্ড কৌতুক, অশ্লীল অঙ্গিভঙ্গি, কিছু অসৎ ইঙ্গিত। এই অন্ধকার, আদিম অভ্যাস স্বভাববশত অন্ধকারের আকর্ষণ হয়ে ডাকে
এমন কত গল্প যে জোকার হয়ে ভাঙাচোরা আকাশের দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস শেখাচ্ছে। বোগেনভিলিয়া ফুলের মধু চুরি করে কে এক হারানো জোকার, সার্কাস প্যান্ডেলে সত্যি সত্যি আগুন ধরয়ে দিয়েছিল। পুড়ে ছাড়খাড় পরিত্যক্ত আঁধার। তাতে যা হবার তাই হয়েছিল। বানানো গল্পের আগেভাগে পরিত্যক্ত দশজন বোঁ বোঁ ঘূর্ণিনাচে চিনিয়ে গেল, এসব না করলে মৃত্যুও জোকার হয়ে ওঠে…
ফেরদৌস নাহার : কবি-প্রাবন্ধিক-গীতিকার-পর্যটন প্রেমী। এখন কানাডা প্রবাসী।
আহা!
ভালো এবং ভালো।
শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো প্রিয় কবি।