ছড়াগুচ্ছ ।। আমিন আল আসাদ।। পুবাকাশ
এক. হৃদয় রাখুন পবিত্র
তর্কবাগীশ খুশী ভিষণ
ভাবছে সে খুব জিতেছে
নিজকে নিজে জয়ী ভেবে
আনন্দ খুব নিতেছে
কিন্ত নিজের কাছে নিজের
দোষটা ধরা পড়ছে না
আত্নজেদ ও তর্ক থেকে
একচুলও সে নড়ছে না
অথচ সে বেশ হেরেছে
সেই কথা সে জানে না
বোধগম্য নয় বলে সে
নিজের দোষটা মানে না
সবাই তাকে খুব চিনেছে
সে যে কঠিন ঝগড়াটে
তার কথা তাই দাম পাবে না
বোধ বিচারের এই হাটে
আপন মনে জয় নিয়ে সে
বাজাক যতই ডুগডুগি
পাগল খুশী মনে মনে
আপন মনেই সে সুখী
এই সমাজে খুব দেখেছি
এই ধরনের চরিত্র
এদের থেকে দুরে থাকুন
হৃদয় রাখুন পবিত্র
দুই. মুর্খ এবং গোঁড়া
ধর্মের নামে মুর্খ কিছু,
মুর্খ কিছু ধর্মহীন
দুই দলেতেই অন্ধ গোঁড়া
নেই হৃদয়ে আলোর চিন
মুর্খ গোঁড়া অন্ধ সনে
রেখোনা কেউ সম্পর্ক
মুর্খ সনে কেউ করো না
অহেতুক কোন তর্ক
মুর্খ গোঁড়াদের সাথে ভাই
তর্ক করে নেইকো লাভ
তাদের সাথে তর্ক হলে
বাড়বে কেবল মনস্তাপ
রুমী বলেন,’এই সমাজের
অপক্ক সব লোকেরা
জ্ঞানীদেরে ভাবে কেবল
ছাগল এবং গো ভেড়া
জ্ঞানের কথা বুঝবে নারে
কোনদিনও মুর্খরা
তাইতো তাদের ঘিরে থাকে
দুর্দশা ও দুখ জড়া
রুমী বলেন, ‘মুর্খদেরে
সালাম দিয়ে দাও বিদায়
বড় জোর এক পাত্র পুরো
খাবার দিও তার ক্ষিধায়
তিন. সিংহ রবে গর্জে ওঠো
সমাজদেহ ভরে গেছে
চরিত্রহীন লম্পটে
ব্যঘ্রহৃদয় প্রতিবাদী
সৎ মানুষ আজ কম বটে
মানুষ রুপী শয়তানেরা
দাপাচ্ছে আজ দাপাচ্ছে
হিংস্র থাবায় দাঁত নখরে
খাচ্ছে যখন যা পাচ্ছে
সিংহ রবে গর্জে ওঠো
হিংস্র দানব রুখতে আজ
সুশোভিত মিষ্টি গোলাপ
শান্তি সুবাস শুঁকতে আজ
চার. ইচ্ছা করে–
ইচ্ছা করে সমাজটাকে
আচ্ছা মতন পিটাই
খাচ্ছে যারা তোমার আমার
কষ্টে গড়া মিঠাই
ইচ্ছা,করে ওদের মুখে
আবর্জনা ছিটাই
বিষ্টা মাখা জুতার তলা
এদের বুকে ইটাই
পাঁচ. ঘুষ খোর
এই ব্যটা ঘুষখোর
আর কত খাস রে
এত্তো খেয়ে ভুড়ি হলো
তবু কেনো চাষরে
ঘুষ খোর গমচোর
সমাজের পান্ডা
ব্যটাদের পেটে মারো
হাতুড়ী ও ডান্ডা
ছয়. সৎ লোকেরা জাগছে না!
হারামী হারামজাদা যত
হারামখোরের বাচ্চারা
খাচ্ছে আগা খাচ্ছে তলা
খাচ্ছে বাগান গাছ চাড়া
মানুষ রুপী হারামজাদা
হারাখোরের চাইতে ঢের
মূল্য আছে অনেক বেশী
পথের নেড়ি কুকুরের
মানুষ রুপী কুত্তা কিছু
সমাজ চষে বেড়াচ্ছে
বিবেক ব্যটার তন্দ্রা ঘেরা
চক্ষু এসব এড়াচ্ছে
সহ্যসীমার বাইরে তবু
সৎ লোকেরা জাগছে না
অন্ধকার আর অকল্যানের
প্রেতগুলো তাই ভাগছে না
আমিন আল আসাদ : কবি ও প্রাবন্ধিক।
আমিন আল আসাদ এর ছড়া কবিতায় সমাজের বাস্তবচিত্র আয়নার মতো দৃশ্যমান। প্রতিবাদের বলিষ্ঠ ভাষা বাঙময় হয়ে ফুটে ওঠে তার ছড়াগুলোতে। প্রচার বিমুখ এই কবিকে সামনে তুলে ধরার সময় এসেছে।