আল্লামা রুমীর দশটি কবিতা।। আলমগীর মোহাম্মদ অনূদিত।। পুবাকাশ

১.
তোমাকে কিছু বলার আছে ভোরের হাওয়ার।
ঘুমিয়ে পড়ো না আবার।
তোমার অবশ্যই বলা উচিত কি চাও।
ঘুমিয়ে পড়ো না আবার।
দরোজার চৌকাঠ মাড়িয়ে মানুষ আসা যাওয়া করছে
যেখানে দু’জাহান মিশে গেছে।
দরোজাটা গোলাকার ও খোলা।
ঘুমিয়ে পড়ো না আবার।

২.
ফল বাগানে এসো বসন্তে।
সেখানে আলো ও মদ আছে, এবং প্রেয়সী
ডালিম ফুলের মাঝে।
তুমি যদি না আসো, এটা কোন ব্যাপার না।
তুমি যদি আসো, এটা কোন ব্যাপার না।

৩.
তারা বলতে চায় তুমি কে, আধ্যাত্মিক না কামজ?
তারা বিস্ময় প্রকাশ করে সোলাইমান ও তাঁর স্ত্রীদের নিয়ে।

দুনিয়ার বুকে, তারা বলে, একটি আত্মা আছে
এবং তুমিই সেটা।
কিন্তু আমাদের মধ্যে পথ আছে
যা কেউ কখনো বলবে না।
৪.
প্রেমিককে হতে দাও অশোভন, উন্মত্ত,
ভুলোমনা। নম্র কেউ
গেল গেল বলে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে।
প্রেমিককে তাই হতে দাও।

৫.
সারা দিন ও রাত, সংগীত,
একটি শান্ত, উজ্জ্বল
গোপগান। এটা
নেতিয়ে পড়লে, আমরা বিবর্ণ হয়ে যাই।

৬.
তোমার আলোয় আমি ভালোবাসতে শিখি
কবিতা লিখতে শিখি তোমার সৌন্দর্যে।

বুকের ভিতর নাচো তুমি,
সবার অলক্ষ্যে,

কিন্তু মাঝেমধ্যে আমি দেখি
এবং সেই দেখা শিল্পের জন্ম দেয়।

৭.
আমরা একই সাথে আয়না ও আয়নায় দেখা মুখ
এই মুহুর্তে স্বাদ নিচ্ছি
পরজীবনের। আমরা ব্যথা এবং
ব্যথা উপশমকারী। আমরা
সুমিষ্ট শীতল জল ও কলসি।

৮.

আমি তোমাকে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে রাখতে চাই গীটারের মতো
ভালোবাসার উল্লাস করতে পারি যেন।
তুমি বরং আয়নায় একটা পাথর ছুঁড়ো
আমি তোমার আয়না এবং এই নাও পাথর।

৯.
যখন তোমার পাশে থাকি, দুজনে সারারাত জেগে থাকি
যখন তুমি পাশে নেই, আমি আর ঘুমুতে যেতে পারি না।

খোদার শোকর এই দুই নিদ্রাহীনের জন্য !
এবং তাদের দুজনের অমিলের জন্য।

১০.
তোমার গলা এঁটে যেতে দিও না
ভয়ে। নিঃশ্বাস নাও
সারাদিন ও রাত ভর, মৃত্যু
তোমার মুখ বন্ধ করে দেয়ার আগে।

আলমগীর মোহাম্মদ:  প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অভ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি।

মন্তব্য করুন

এখানে মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন