দু‘টি কবিতা
জাহাঙ্গীর আজাদ
পুবাকাশ
🔴 কাকবন্ধ্যা
সমুদ্র পেরুনো ঝড় ছুঁয়ে দিলে পাহাড়ের নাভি
স্মৃতি তাকে নিয়ে যায় নৈঋতে ধূসরে ও দূরে
সহস্র বৎসর আগে এমন এক ঝড়ো রাত শেষে
ঝর্ণাধারাটি নেমে এসেছিলো জরায়ুকে খুঁড়ে
এরপর কতো গর্কি, শত ঝড়, শত জলোচ্ছ্বাস
ছুঁয়ে গেছে, নেড়ে দিয়ে গেছে তার গর্ভের মূল
মনন্তর যতো গেছে, তেমনি গেছে ফসল উৎসব
তবুও দ্বিতীয়বার হয়নি ধারণ করা জন্মমুকুল
সময়ের অভিঘাতে সেদিনের শিশু ঝর্ণাধারা
পেরিয়েছে শৈশব, যৌবনও ফুরিয়েছে কবে
মৌন চোখে মা–পাহাড় দেখে যায় ক্ষীণ স্রোতরেখা
কেমন মিলিয়ে আসে আগ্রাসী মরু উৎসবে
🔴 কেউ কি আদৌ ছিলো ?
লন্ঠনের তেরছা আলোয় মুখখানি আবছায়া
পথের শেষে দাঁড়িয়ে ছিলো তোমার মতো কেউ
সন্ধ্যা শেষের ট্রেনের শব্দ মিলিয়ে যাবার পরে
ল্যাম্পপোস্টের শিথিল তারটি দোলায় স্মৃতির ঢেউ
এ পথ বেয়ে হেঁটে গেছে রাংতা মোড়া আধফালি শৈশব
কৈশোরটিও লেপটে আছে ঝুলকালিতে মাকড়সাদের জালে
পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা তোমার আমার মধ্যিখানে তবু
মজে আসা নদীর মতো আর কখনও ঢেউ জাগে নি পালে
পথের শেষে দাঁড়িয়েছিলো তবু তোমার মতো
তুমি তো নও, কেউ কি আদৌ ছিলো ?
হোঁচট খাওয়া নড়বড়ে নখ, তবুও খোঁড়ে মাটি
স্মৃতির মতো দড়ির আগুন কেউ কি নেড়ে দিলো ?