কবিতা
বিহঙ্গপুরাণ ।। রুহুল কাদের।। পুবাকাশ
এক.
পিঞ্জরভাঙা বিহঙ্গ,শিকলে মাখা আছে মৃত্যুবিষ
ভুলে যাও কেন? কোনো কোনো পিছুটান মৃত্যুকূপের অধিক ভয়ানক।জলপাইঝোপে গুপ্তঘাতক লুকিয়ে থাকে
অবচেতনে টলায় বুঝি তরল তৃষ্ণার রঙিন কুহক
নৈঃসঙ্গ্যের বরফজলে কাঁপো নাকি উড়ালসড়কে?
মোহের ঘোর, লোহায় ঘেরা আঁধার গারদ
খাঁচার শিকল ক্রোধের বারুদে সেঁকে চিবিয়ে চিবিয়ে
খাও। সমর্থ শরীরের জন্য কিছু লৌহ লাগে
পঙ্কতোয়ায় ডুব দিও না নিঃশর্ত মুক্তির আগে।
দীঘল গ্রীবা ফুলিয়ে আছে ভুখা অজগর। গিলে
খেতে একান্ত আকাশ, যত্নেবোনা খুদ,শস্যখেত
সস্তা মোহের তেলতেলে মুখে চোখবুঁজে আগুন দাও
বিহঙ্গ শুনো,দুর্মূল্যের বাজারে বারুদের বাক্স
মাত্র দুয়েক টাকা। নাও,পুড়িয়ে উড়ে যাও
দুই.
আর্ত পাখি,ডানার ওমে শাবক লুকিয়ে কাঁপছো ধূ ধূ বিলে
এতদিন দালানের ঘুলঘুলিতে নাকি পাতায় বাঁধা নীড়ে ছিলে?
রাতের আঁধারের নির্মোক তবু্ও খানিক নিরাপদ রেখেছিল
দিনে রূপান্ধ শিকারী তাক করে কামুক বন্দুক,
রেশমি পালক, টানা টানা চোখ, মাংসল শরীরে
সবার লোভ পড়ে, নিরাসক্ত নয় কোনো নিন্দুক
উড়ে গেলে খসে পড়ে উড়াল-অক্ষম ছানা
তাড়া খেয়েও নিরাশ্রয় থমকে আছ গুলির মুখোমুখি,
ডানা থেকেও নেই ঘাসে ভেসে ওঠে নিটোল শরীর
আত্নরক্ষার জন্য করবে কোথায় ব্যাকুল লুকোলুকি?
উড়ে যাও,ধরা দিলে রূপের জোরে ঘর পাবে আবদ্ধ পিঞ্জর,
ছানার ভাগ্যে জুটবে হয়তো শান দেয়া দ্বিধারী খঞ্জর
রুহুল কাদের: কবি ও গল্পকার।