কবিতা
ডাউন দ্য মেমোরি লেন।। পাহাড়ী ভট্টাচার্য।। পুবাকাশ
০১.
করতলে লেবুপাতার ঘ্রাণের মত এই আঙ্গুলে,
গায়ে, জামায় লেপ্টে আছে শৈশব ; লজেন্সের
সুস্বাদ, একটি হারানো ক্রিকেট বল কিংবা রঙিন
ঘুড়ির জন্য হাহাকারের বালকবেলা। অপার্থিব সে
সব অবাধ্য দুপুরের স্মৃতিমগ্নতা নিয়ে নির্ঘুম
আমি আজো, অজস্র মধ্যান্হ বেলা!
০২.
কি দুর্বোধ্য দ্রূততায় বদলে যাচ্ছে ক্রমশ চারপাশ!
এইসব পুরাতন গলি-ঘুপচি-পাড়া, কাঁচা-পাকা সড়ক
পলেস্তরা খসা বাড়ির কড়িবরগা, পাঁচিল, গেরস্থালী
এবরো-থেবরো শরিকী উঠোন কিংবা বাদ-বিবাদের
কলতলা, এবং আমাদের প্রাগৈতিহাসিক আকাশ!
আমাদের স্মৃতিমেদুর মায়াবী বিকেল-মাখা মাঠ,
আমাদের অগনন দিন, অলস দুপুরে ঢাকা ছাদ
হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমে মাল্টিস্টোরেডে, ভীড়ে-ভাট্টায়
তবু পোড়া মন কৈশোর খোজেঁ, যদ্যপি ভাঙ্গা হাট।
০৩.
চায়ের কাপে ঝড় তোলা সন্ধ্যারা নেই, হারিয়েছে
তারুণ্য-ঘেরা শ্লোগানের দিন, কত মিছিলের মুখ!
বেহাত বিপ্লব ভুলে গেছে প্রসববেদনাও, নপুংসক?
মানচিত্র বদলেছে ভীষন, তবু অস্থির মানবজমিন।
০৪.
অমোঘ অমানিশির বদলে যাওয়া এক পৃথিবীতে
পেন্ডুলামের মতই নিত্য জীবন দোলে অনিশ্চিতে
কালের কালকুট হয়ে চাই না রেখে যেতে কোন চিহ্ন
শৈশব ডাকে, মহাকালও। ছিন্ন-ভিন্ন আমার অপরাহ্ন!
পাহাড়ী ভট্টাচার্য : কবি ও চিন্তক।