হাফিজ শামসুদ্দিন মুহাম্মদ শিরাজী’র তিনটি অনূদিত কবিতা
আলমগীর মোহাম্মদ

শামসুদ্দিন মুহাম্মদের জন্ম ১৩১৫ সালে শিরাজ শহরে। বেড়ে উঠার সাথে সাথে সেখানে তিনি কোরান শিক্ষায় বুৎপত্তি লাভ করেন। যৌবনে তিনি কোরান মুখস্থ করেছিলেন এবং স্বীকৃতিস্বরুপ ‘হাফিজ’ নামে অভিহিত হন। ফার্সি ভাষার অন্যতম এই প্রধান কবি তাঁর গজলের জন্য বিখ্যাত। ১৩৯০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

১.সাহসী ছিলে তুমি সেই পবিত্র যুদ্ধে

সবকিছু করেছিলে তুমি
পাগলামোর ব’শে।
সাহসী ছিলে তুমি সেই পবিত্র যুদ্ধে।
তোমার আছে সমীহ জাগানো ব্যথা সকল
যা চেয়েছিল ভালোবাসা পেতে
যেখানে সুন্দর পাখিটি
পান করে না।
আমি কি তোমার সাথে আলাপে যেতে পারি
যেন আমরা পরস্পর ঘনিষ্ঠ
এবং একই বন্ধনে আবদ্ধ?
একবার একটি পথভোলা বিড়ালছানা পেয়েছিলাম
এবং আমি আমার আঙুল ভেজাতাম
গরম দুধে;
সে আমাকে মনে করেছিল এক হাতে
আমি পাঁচজন মা।
পথিক,
ক্লান্ত দেহে বিশ্রাম নাও না কেন?
হেলান দাও ও চোখ বুজে থাকো।
কাল সকালে
তোমার পাশে হাটু গেড়ে বসব এবং তোমাকে খাওয়াব।
এটা করব যত্নের সহিত
মুখ খোলো
এবং নিজেকে পেতে দাও
আমার পবিত্র মন ও জীবনের স্বাদ।
নিশ্চয়
কোথাও কোন ভুল আছে
ঈশ্বর নিয়ে তোমার ভাবনায়।
ওহ, নিশ্চয় কোথাও কোন ভুল আছে
ঈশ্বর নিয়ে তোমার ভাবনায়
যদি মনে করো
আমাদের প্রেম হবে না
কোমল।

২.চোখজোড়া কোমল মোর

সমর্পণ করো না
তোমার একাকিত্বকে অত তাড়াতাড়ি।
এটাকে আরো
গভীরে যেতে দাও।
তোমাকে জাগাতে দাও
এবং মাতাল করতে
যেমনটা খুব কম লোক পারে
বা এমনকি স্বর্গীয় সুধা ও।
আজ রাতে আমার অন্তর কিছুটা শুন্য
কোমল হয়ে আসছে চোখজোড়া মোর
আমার স্বর খুবই
অনুচ্চ,
খোদার প্রয়োজন আমার
সম্পূর্ণ
পরিস্কার।

৩.অনেক সুন্দর

আগুন
তোমাকে তাতিয়ে দিয়েছে।
তোমার শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অঙ্গগুলো
পুড়ে গেছে,
সুতরাং
অবশ্যই তুমি দৌড়েছ
বিবাহিত স্ত্রী ফেলে
পর নারীর ঘরে
যা তোমাকে সরিয়ে রাখবে
খোদার যত রহমত থেকে ।
খোদা
আমাদের পাশে গর্জেছেন।
আমাদের অন্তর চক্ষুর পাতা ঝলসে গেছে।
অবশ্যই
আমরা বঞ্চিত হয়েছি
তাঁর
কোমল পরশ থেকে
যা আমাদের মৃত্যু ডেকে এনেছিল
অনেক বাস্তব
অনেক
সুন্দর।

আলমগীর মোহাম্মদ : শিক্ষক, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।

মন্তব্য করুন

এখানে মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন