সেতু’র জন্য শুভকামনা।। নীলুফার খানম।। পুবাকাশ

কবি-গবেষক জফির সেতুর ‘ না চেরি না চন্দ্রমল্লিকা ‘ বইটি সংগ্রহ করে পড়া শেষ করলাম । পড়ার পরে মগ্ন হয়ে বসে আছি । ধ্রুব এষের নান্দনিক প্রচ্ছদে নাগরী থেকে প্রকাশিত অসম্ভব সুন্দর একটি বই ।

ভ্রমণ আখ্যান হিসেবে বইটি সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত এটিকে কেবল ভ্রমণ আখ্যানই মনে হয়নি । মনে হয়েছে লেখক সাহিত্য, সংস্কৃতি ও বৈশ্বিক মানুষের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেছেন । বিশ্ব সাহিত্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন । সর্বোপরি লেখকের আত্মকথনই বইটির ভাঁজে ভাঁজে । অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তিনি এতোগুলো বিষয়ের সমন্বয় করেছেন যা পাঠকের মনযোগ ব্যাহত করে না । বর্ণণাভঙ্গি অত্যন্ত অকপট ও সাবলীল ।

শৈশবে জানা জাপান কিংবা চীন এর সাথে এ পর্যায়ে এসে নিজের চোখে দেখার পারস্পরিক যে যোগসূত্র জফির দেখিয়েছেন তাতে পাঠক হিসেবে আমাকে ব্যাকুল নাড়া দিয়ে গেছে ।

লেখকের সাথে নারিতা বিমানবন্দরে ঢোকা থেকে শুরু করে আবার বিমানবন্দরে ফেরার পথে যে মহৎ মানবিক কাহিনী বর্ণিত হয়েছে তাতে পাঠক হিসেবে আমিও এর অংশীদার হয়ে যাই । রাজপ্রাসাদের সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠে শুয়ে থাকতে না পারার বেদনা আমাকেও ছুঁয়ে যায় ,যেমন ছুঁয়ে যায় হোটেলের লবিতে বসে কফি পানের দৃশ্য ।

‘ না চেরি না চন্দ্রমল্লিকা ‘ নামটি দেখে মনে একধরনের খটকা ছিল । কিন্তু বইটির শেষে লেখেকর যে আত্মোপলব্ধি সেটি পড়ে মনে হলো এরচেয়ে যথার্থ নামকরণ হতেই পারতো না ।

বাংলা ভ্রমণ সাহিত্যে জফির সেতু বহুমাত্রিকতা এনেছেন । এ ধারাবাহিকতায় তিনি আরো নতুন নতুন সংযোজন করবেন এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি । জফির সেতুর জন্য শুভকামনা ।

নীলুফার খানম: সহযোগী অধ্যাপক, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য,  শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়,  সিলেট।  

মন্তব্য করুন

এখানে মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন